দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদগুলোয় যা থাকছে

জাগরণ ডেস্ক প্রকাশিত: জুন ১১, ২০২১, ০৩:৫২ পিএম দৃষ্টিনন্দন মডেল মসজিদগুলোয় যা থাকছে

দেশের বুকে তৈরি হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। এর মধ্যে প্রস্তুত ৫০টি। নির্মাণ কাজ শেষে উদ্বোধন হলো। চোখ ধাঁধানো এসব মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোতে থাকছে আকর্ষণীয় সব সুবিধা। ধর্মপ্রাণ মুসলিমরাসহ মসজিদের সৌন্দর্য দেখতে ছুটছেন কৌতুহলীরাও।

বিশ্বে কোনো মুসলিম শাসকের একসঙ্গে ৫৬০টি মসজিদ নির্মাণ এই প্রথম। সেদিক থেকে বলা যায়, এটা ইতিহাসের সাক্ষী হতে যাচ্ছে। 

কী কী থাকছে এসব মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রগুলোতে, এ নিয়ে আগ্রহ ছড়িয়ে পড়েছে চারপাশে। 

নান্দনিক নির্মাণশৈলীতে প্রায় ৪০ থেকে ৪৩ শতাংশ জায়গার উপর ৩টি ক্যাটাগরিতে বানানো হচ্ছে মসজিদগুলো। জেলা পর্যায়ের মসজিদগুলো হচ্ছে ৪ তলা, উপজেলা পর্যায়ের মসজিদগুলো হচ্ছে ৩ তলা। আর উপকূলীয় এলাকায় মডেল মসজিদ ও ইসলামী সংস্কৃতি কেন্দ্র নির্মাণ হচ্ছে ৪ তলা পর্যন্ত। এসব মডেল মসজিদে রয়েছে একটি করে মিনার।

এ-ক্যাটাগরি-তে রয়েছে ৬৪টি জেলা। এই জেলাগুলোর শহরে এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় ৬৯টি ৪ তলা বিশিষ্ট মডেল মসজিদ নির্মিত হচ্ছে। এসব মসজিদের প্রতিটি ফ্লোরের আয়তন হচ্ছে ২ হাজার ৩৬০ দশমিক ০৯ বর্গমিটার।

বি-ক্যাটাগরি-তে থাকছে উপজেলা পর্যায়ে ৪৭৫টি মডেল মসজিদ। প্রতি ফ্লোরের আয়তন হচ্ছে ১ হাজার ৬৮০ দশমিক ১৪ বর্গমিটার। এসব মডেল মসজিদে রয়েছে একটি করে মিনার।

সি-ক্যাটাগরি-তে উপকূলীয় এলাকায় ১৬টি মসজিদ হচ্ছে। এগুলোর প্রতিটি ফ্লোরের আয়তন হচ্ছে ২ হাজার ৫২ দশমিক ১২ বর্গমিটার।  উপকূলীয় এলাকার মসজিদগুলোকে দুর্যোগের সময় আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে। এর জন্য প্রতিটি মসজিদের নিচতলা ফাঁকা রাখা হবে।

সব মসজিদে রাখা হয়েছে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা। এসব মসজিদে নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে জেলা শহর ও সিটি করপোরেশন এলাকায় ১৫ কোটি  ৬১ লাখ ৮১ হাজার টাকা, উপজেলা পর্যায়ে ১৩ কোটি ৪১ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং উপকূলীয় এলাকায় ১৩ কোটি ৬০ লাখ ৮২ হাজার টাকা।

সারাদেশে এসব মসজিদে প্রতিদিন চার লাখ ৯৪ হাজার ২০০ জন পুরুষ নামাজ পড়তে পারবেন। নারীদের জন্য় ব্যবস্থা থাকছে। ৩১ হাজার ৪০০ জন নারী একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারছেন। একসঙ্গে কোরআন তেলাওয়াত করতে পারবেন প্রায় ৩৪ হাজার মানুষ।

জেলা সদর ও সিটি করপোরেশন এলাকায় নির্মাণাধীন মসজিদগুলোতে একসঙ্গে ১ হাজার ২০০ মানুষ নামাজ পড়তে পারবেন। উপজেলা ও উপকূলীয় এলাকার মডেল মসজিদগুলোতে একসঙ্গে ৯০০ মানুষের নামাজের ব্যবস্থা থাকছে।

ছাড়াও চলবে ইসলামিক বিভিন্ন বিষয়ে নানা গবেষণা। যেখানে প্রায় ৬ হাজার ৮০০ জন গবেষণায় অংশ নিতে পারবেন। দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নিতে পারবেন ৫৬ হাজার মানুষ। প্রতি বছর এখান থেকে কোরআনে হাফেজ হবেন ১৪ হাজার। আরও থাকবে ইসলামি নানা বিষয়সহ প্রতিবছর এক লাখ ৬৮ হাজার শিশুর প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা।

লাইব্রেরির সুবিধাও থাকছে। প্রতিদিন ৩৪ হাজার পাঠক এক সঙ্গে কোরআন ও ইসলামিক বই পড়তে পারবেন।

দেশি-বিদেশি অতিথির আবাসন ব্যবস্থা থাকছে। দুই হাজার ২৪০ জন অতিথি সেখানে থাকতে পারবেন। কেন্দ্রগুলোতে পবিত্র হজ পালনের জন্য ডিজিটাল নিবন্ধনের ব্যবস্থা রাখা হবে।

নারী-পুরুষের পৃথক ওজু ও নামাজ আদায়ের সুবিধা থাকছে। প্রতিবন্ধী মুসল্লিদের টয়লেটসহ নামাজের স্থান পৃথকভাবে ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এছাড়াও থাকছে ইসলামিক বই বিক্রয় কেন্দ্র, ইসলামিক লাইব্রেরি, অটিজম কর্নার, ইমাম ট্রেনিং সেন্টার, ইসলামিক গবেষণা ও দীনি দাওয়া কার্যক্রম, হেফজখানা, শিশু ও গণশিক্ষার ব্যবস্থা, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আবাসন ও অতিথিশালা।

মরদেহ গোসল ও কফিন বহনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। হজ্জ যাত্রীদের নিবন্ধনসহ প্রশিক্ষণ, ইমামদের প্রশিক্ষণ ও গাড়ি পার্কিং, ইমাম-মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অফিসের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

আরও সংবাদ