মুক্তিযুদ্ধ শুরুর দিন একাত্তরের ২৬ মার্চ ভোরে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দেয়া স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের এক এজলাস কক্ষে কাঁদলেন এক বিচারপতি। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ন্যূনতম বয়সসীমা সংক্রান্ত মামলার রায় ঘোষণার সময় আজ রোববার (১৯ মে) এই পরিস্থিতি তৈরি হয়।
প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চলা এই রায় ঘোষণার শেষ পর্যায়ে এসে রায় প্রদানকারী হাইকোর্ট বেঞ্চের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ কেঁদে ফেলেন। এ সময় রায়ের মধ্যে তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ২৬ মার্চের স্বাধীনতার ঘোষণাটি পড়ছিলেন। এরপর হঠাৎ একটু থেমে যান। তারপর তিনি বলেন উঠেন ‘আমি একটু ইমোশনাল হয়ে গেছি। আমার মনে হয় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ২৬ মার্চ ভোরবেলার দেওয়া স্বাধীনতার এ ঘোষণাটি পড়লে যে কেউই আবেগপ্রবণ হয়ে যাবে।’ এ সময় তিনি বারবার চোখ মোছেন। এ দৃশ্যপটের অবতারণা হলে রিটের পক্ষের আইনজীবীরা দাঁড়িয়ে যান।
এর মধ্যে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় ঘোষণা অব্যাহত রাখে।
রায়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ন্যূনতম বয়স নির্ধারণ করে জারি করা সরকারের গেজেট ও এ সংক্রান্ত আইনের ধারা অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হয়। একইসঙ্গে আবেদনকারী মুক্তিযোদ্ধাদের বকেয়াসহ বন্ধ থাকা সম্মানি ভাতা পরিশোধ বা চালু করতে বলেছে আদালত। রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে এটি কার্যকর করতে বলা হয়েছে। রিটের পক্ষের আইনজীবী পরে বলেন, ‘এ রায়ের ফলে বয়সের ফ্রেমে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাকে নিরূপণ করা যাবে না।’
এর আগে মুক্তিযোদ্ধার ক্ষেত্রে ন্যূনতম বয়স নির্ধারণ করে ২০১৫ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ৩টি গেজেট প্রকাশ করে সরকার। এসব গেজেটে মুক্তিযোদ্ধা হতে হলে ১৩ বছর, যার সর্বশেষটিতে ১২ বছর ৬ মাস বয়স নির্ধারণ করা হয়। পরে এসব গেজেটের বৈধতা চ্যালেঞ্জ ১৫টি রিট করা হয়।
এমএ/ এফসি