• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুন ২২, ২০১৯, ০৩:০২ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুন ২২, ২০১৯, ০৬:১১ পিএম

‘বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনায় এগিয়ে একুশে টেলিভিশন’

‘বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনায় এগিয়ে একুশে টেলিভিশন’
একুশে টেলিভিশনের প্রতিনিধি সম্মেলেনে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট সাংবাদিক আবেদ খান - ছবি : জাগরণ

● লেখনীর মাধ্যমেই জনমত গঠিত ও প্রভাবিত হয় : পররাষ্ট্রমন্ত্রী

●টিভি মিডিয়ার জন্য ওয়েজবোর্ড নির্ধারণের কাজ করছে সরকার : সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী

● একুশে টেলিভিশন নতুনত্ব সৃষ্টি করেছিল : আবেদ খান

বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা ও নিরপেক্ষ তথ্য পরিবেশনের মাধ্যমে দেশ ও জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে একুশে টেলিভিশন (ইটিভি)। কথাগুলো বললেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।

শনিবার (২২ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজারস্থ একুশে টেলিভিশন (ইটিভি) এর প্রধান কার্যালয়ে প্রতিনিধি সম্মেলেনে  ‘সাংবাদিকতা ও পেশাগত দক্ষতা’ বিষয়ক অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

তিনি বলেন, গণমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি, আপনারা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন ও গঠনমূলক সমালোচনার মধ্য দিয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে ভবিষ্যতেও কাজ করে যাবেন। 

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশে যে উন্নয়ন হয়েছে এটা বিশ্বের দরবারে জানান দিতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে হবে। আপনাদের মাধ্যমে মানুষ জানতে পারবে বাংলাদেশের সাফল্যের গল্প।

মন্ত্রী আরও বলেন, সাংবাদিকদের লেখনীর মাধ্যমেই জনমত গঠিত ও প্রভাবিত হয়। শুধু বিভাগীয় বা জেলা শহরগুলোতেই নয় বরং উপজেলা ও প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সাংবাদিকরা নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। এসব সাংবাদিকের পেশাগত দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের জন্য তথ্য-প্রযুক্তি সুবিধা নিশ্চিত করাসহ দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। তবে আপনাদের সঠিক ও বস্তনিষ্ঠ তথ্য দিতে হবে। তাহলে আপনাদের মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে।

তিনি বলেন, একটি উন্নয়নশীল দেশ বাংলাদেশ। আর উন্নয়নশীল মুসলমান দেশগুলো যখন উন্নতি করে তখন অনেক দেশ থেকে বাধা আসে। সারা বিশ্বের মধ্যে উন্নতশীল দেশ ছিল ইরান। দেখেন, আজ তারা ধ্বংস হয়ে গেছে। সুতরাং যে দেশ উন্নয়ন করে সে দেশের কিছু সমস্যাও থাকে। আমাদের দেশেও কিছু সমস্যা আছে। সেগুলোকে আপনাদের লেখনির মাধ্যমে তুলে ধরতে হবে। আপনারা হলেন জাতির বিবেক ও সামাজের তৃতীয় চোখ। তাই আপনাদের সমাজ পরিবর্তনে গুরু-দায়িত্ব পালন করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, সংবাদপত্রের মতো ইলেকট্রনিক মিডিয়ার জন্য ওয়েজবোর্ড নির্ধারণের ব্যাপারে সরকার কাজ করছে। 

তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তাই বর্তমান সরকার মিডিয়ার ব্যাপারেও সোচ্চার রয়েছেন। এ সময় ইলেকট্রনিক মিডিয়ার জন্য ওয়েজবোর্ডের ব্যবস্থা করার বিষয়ে সরকারের অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন তিনি।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি প্রেস ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশ-পিআইবি এর চেয়ারম্যান এবং দৈনিক জাগরণ এর প্রকাশক ও সম্পাদক আবেদ খান বলেন, একুশে টেলিভিশন সমাজের চেহারা পাল্টে দিয়েছিল। মন ও মননের পরিবর্তন ঘটিয়ে একুশে টেলিভিশন দিয়েই আমরা নতুনত্ব সৃষ্টি করেছিলাম। 

আবেদ খান বলেন, ইচ্ছেমতো ভুল চাঞ্চল্যকর তথ্য সাংবাদিকরা দিতে পারেন না। সাংবাদিকরা মানবতার জন্য কাজ করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের মানবিকতা জাগ্রত করেছে। স্বপ্ন মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যায়। উদ্দীপনা তৈরি করে। যে মানুষ যত বড়, তার স্বপ্ন তত বড়। 

১৯৭১ সালের সাড়া জাগানো বিদেশি সাংবাদিক সাইমন ড্রিংয়ের মতো অনেক বিশিষ্ট সাংবাদিকের হাত ধরেই একুশে টেলিভিশন পথচলা শুরু করেছিল উল্লেখ করে আবেদ খান বলেন, একটি প্রতিষ্ঠানকে দাঁড় করাতে হলে সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা দরকার। হৃদয় দিয়ে কাজ করতে হয়। যারা একসময়ে এ টেলিভিশনে কাজ করেছেন তারা আজ সাংবাদিকতায় অনন্য অবস্থানে এসেছেন। যারা এখানে শিখেছিলেন তারা প্রমাণ করেছেন তারা ভুল জায়গায় শিক্ষা লাভ করেনি। 

সকলের প্রচেষ্টায়ই একুশে টেলিভিশন এই জায়গায় এসেছে বলে উল্লেখ করে আবেদ খান বলেন, প্রতিষ্ঠান যেন কোনও অবস্থাতেই ব্যক্তির চেয়ে ছোট না হয়ে যায়। নতুন প্রজন্ম একুশে টিভিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের টেলিভিশন সাংবাদিকতায় একুশে টেলিভিশনের অন্যতম অবদান রয়েছে। টেলিভিশনের প্রতিটি বিষয় এই একুশে টেলিভিশন থেকেই শুরু হয়েছিল বলে তিনি মন্তব্য করেন। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন একুশে টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মাদ আলী শিকদার, বার্তা প্রধান মোহসীন আব্বাসসহ চ্যানেলটির জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও কর্মকর্তাবৃন্দ। 

এর আগে সকালে প্রতিনিধি সম্মেলনের উদ্বোধন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। 

একুশে টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেজর জেনারেল একেএম মোহাম্মাদ আলী শিকদার (অব.) বলেন, একুশে টেলিভিশন বাংলাদেশ ও বাঙালির চেতনা বহন করে। একুশে টেলিভিশন বাংলাদেশের কথা বলে, বঙ্গবন্ধুর চেতনা বহন করে। একুশে কাজ করবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের জন্য। কিন্তু বাংলাদেশ বিরোধী শক্তি এই একুশে টেলিভিশনের পথযাত্রা বন্ধ করে দিয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, সব প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে একুশে টেলিভিশন আবার ফিরে এসেছে। এতদিনে একুশে টেলিভিশন সবার উপরে থাকার কথা ছিল। কিন্তু অনেক সীমাবদ্ধতা নিয়ে কাজ করছি। আশা করছি, সোনার বাংলা গড়তে একুশে টেলিভিশন বিশেষ ভূমিকা রাখবে। 

অনুষ্ঠানের প্রথম অধিবেশনে স্বাগত বক্তব্য দেন একুশে টেলিভিশনের হেড অব নিউজ মোহসীন আব্বাস। এরপর সমৃদ্ধ মফস্বল সাংবাদিকতার অনন্য অবদানের জন্য একুশে টেলিভিশনের তিন জেলা প্রতিনিধিকে পুরস্কৃত করা হয়। শ্রেষ্ঠ প্রতিনিধির পুরস্কার পাওয়া প্রতিনিধিরা হলেন- গাজীপুর প্রতিনিধি অপূর্ব রায়, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি বিকুল চক্রবর্তী এবং সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি স্বপন মির্জা। 

দিনব্যাপি এ সম্মেলনকে কয়েকটি অধিবেশনে ভাগ করা হয়। একুশে টেলিভিশনের জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা প্রতিনিধিদের দিক-নির্দশনা প্রদান করেন। 

একুশে টেলিভিশন বা ইটিভি বাংলাদেশের প্রথম বেসরকারি টেলিভিশন সম্প্রচার কেন্দ্র। ২০০০ সালের ১৪ এপ্রিল ইটিভি সম্প্রচার কার্যক্রম শুরু করে। প্রথমদিকে এটি উন্মুক্ত টেরিস্টেরিয়াল টেলিভিশন কেন্দ্র হিসেবে সম্প্রচার শুরু করে। টিভি চ্যানেলটির খবরে নতুনত্ব ও অভিনবত্ব থাকার কারণে দর্শকদের কাছে বিপুল জনপ্রিয়তা লাভ করে।

টিএইচ/এফসি/ এসএমএম