ঢাকা মহানগরীর তিন সড়কে রিকশা চলাচল বন্ধের ঘোষণায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে মহানগরীর বাসিন্দাদের মধ্যে। তবে সব ধরনের পরিবহন চালকরা খুশি।
গাবতলী-সায়েদাবাদ রুটে চলাচলকারী ৮ নম্বর পরিবহন চালক মিজান দৈনিক জাগরণকে বলেন, রিকশা চালকরা তো অশিক্ষিত। অশিক্ষিত আমিও। কিন্তু হেরা এতোটাই অশিক্ষিত যে, সিগন্যাল বোঝে না, মানতেও চায় না। হুরুৎ কইরা ভইরা দেয়।
সায়েদাবাদ-কুড়িল সড়কে চলাচলকারী অনাবিল পরিবহনের হেল্পার রমজান বলেন, প্রতিদিন রিকশা চালকদের লগে চিল্লাইতে চিল্লাইতে জান থাকে না। রং-ও করব, কিছু কইলে আবার মারতেও আসে।
সিএনজি অটোরিকশা চালক, প্রাইভেট কার-মাইক্রোবাস চালক, মোটর সাইকেল চালক- সবার মধ্যে এ ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
প্রাইভেট কার চালক ফয়সাল বলেন, রিকশা চালকদের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে আছি। এই যে এতো আস্তে চালাই, হর্ন দেই, তারা সরেই না। তাদের তো লুকিং গ্লাসও নেই যে, পেছনের অবস্থা দেখবে। অথচ রাস্তায় চলাচলে আমাদের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। আমাদের সময় নষ্ট করে।
ফয়সালের গাড়ির মালিক রেবেকা সুলতানা একজন ব্যাংকার। তিনি বলেন, আমার গাড়িতে কয়েকটা স্পট আছে রিকশার। আমি সরকারের সব নিয়ম মেনে গাড়ি চালাই। কত কী কাগজপত্র লাগে। অথচ কাগজপত্র ছাড়া একটা রিকশার কারণে আমাকে কতই না ক্ষতির শিকার হতে হচ্ছে। গাড়িতে দাগ, সময় নষ্ট- আরও কত কী।
ফুটপাথের চা দোকানদার ইসহাক বলেন, রিকশা চালানো বন্ধ হলে ওরা কী করে খাবে, সেটাও দেখা উচিত।
শেরে বাংলা নগর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার চা দোকানদার মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান দৈনিক জাগরণকে বলেন, কই রিকশা তুলছে? ঢাকায় রাস্তা আছে শত শত, এর মইধ্যে মাত্র তিনটায় রিকশা চলব না? এইটা কী হইল? এদের কারণে প্রধান সড়ক তো বটেই, অলিগলিও জ্যামে থাকে। এরা কারও কথা শুনেও না।
পুরো ঢাকা থেকে রিকশা উঠিয়ে দেয়া উচিত মন্তব্য করেন ব্যবসায়ী রাকিবুল ইসলাম। তিনি বলেন, আমি নিয়মিত রিকশায় চড়ি। তারপরও বলব এসব তুলে দেয়া উচিত। কারণ রিকশায় চলাচলের সময় তো দেখি, তারা কিভাবে সড়কে যানজট তৈরি করে, সড়ককে বিশৃঙ্খল করে দেয়।
তাহলে রিকশা চালকরা করবে কী- এমন প্রশ্নে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রায়হান ফেরদৌস বলেন, তারা গ্রামে যাক, সেখানে কৃষি কাজ করুক। মৌসুমে ধানের আবাদ করবে বা চাষির জমিতে কাজ করবে। ধান শেষ হলে বসত বাড়িতে কৃষি কাজ করবে। কৃষি কাজের কি অভাব আছে? রিকশা চালানোর মতন অমানবিক পরিশ্রম কোনোভাবেই কাম্য নয়।
তিনি বলেন, যদ্দুর জানি, ঢাকায় অনুমোদিত রিকশার সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার। কিন্তু চলছে প্রায় নাকি ১০ লাখ। বুঝেন তাহলে, এই জিনিস কেন ঢাকার ক্ষতি করবে না?
আরএম/টিএফ