• ঢাকা
  • বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৯, ২০১৯, ০৫:২০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৯, ২০১৯, ০৫:২২ পিএম

রিকশাচালকদের আন্দোলন

রাজধানীর পূর্ব-উত্তরাঞ্চল অচল  

রাজধানীর পূর্ব-উত্তরাঞ্চল অচল  
রাজধানীর বাসাবো বিশ্বরোডে রিকশা শ্রমিকদের অবরোধ- ছবি: কাশেম হারুন

রিকশাচালকদের আন্দোলনে রাজধানীর নতুন বাজার-বাড্ডা-রামপুরা মালিবাগ-গোলাপবাগ সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। এ বন্ধের কারণে কার্যত অচল হয়ে পড়েছে রাজধানীর পূর্ব-উত্তরাঞ্চল। প্রায় বন্ধ রয়েছে সংশ্লিষ্ট এলাকার সরকারি-বেসরকারি অফিস আদালত ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। ভোগান্তিতে পড়েছেন  অফিস ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাওয়া মানুষ। 

এরই মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন লাইসেন্সধারী রিকশা চালকদের আলোচনার আহবান করেছেন। আলোচনার মাধ্যমে এ পরিস্থিতি সমাধানের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তারপরও রিকশাচালকরা রাস্তা ছেড়ে যাচ্ছে না। রিকশা চালকরা বলেছেন, তাদের রুটি রুজির উপর হাত পড়েছে। তাদেরকে আগের মতো সকল সড়কে রিকশা চালানোর  বৈধতা দিতে হবে। তা না হলে তারা রাস্তা ছেড়ে ঘরে ফিরে যাবে না। 

মঙ্গলবার (০৯ জুলাই) এ অবস্থার কোন সমধান না হলে কাল বুধবার সকাল থেকে তারা আবারো রাস্তা অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে।

রাস্তায় পোস্টার হাতে এক রিকশা চালকের সড়ক  অবরোধ- ছবি: রাজধানীর বাসাবো বিশ্বরোড থেকে তুলেছেন কাশেম হারুন  

সকাল থেকেই নতুন বাজার রামপুরা-বাড্ডা মালিবাগ মুগদা গোলাপবাগ সড়ক অবরোধ করেছেন রিকশাচালকরা। সিটি করপোরেশনের ঘোষণা তুলে না নেয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়া মালিবাগ ও খিলগাঁও রেলগেট এলাকায় রিকশাচালকরা অবরোধ করেছেন। সেখানে রেলগেটের পিলার উপড়ে ফেলেছে রিকশাচালকরা। এসময় পুলিশের সঙ্গে রিকশাচালকদের মৃদু ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। সেখানেও রাস্তা দিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

রিকশাচালক শফিক জানায়, মঙ্গলবার  সকাল ৭টার দিকে বাড্ডা-রামপুরা সড়কের বিভিন্ন এলাকায় রিকশাচালকরা জড়ো হয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেন। রামপুরা টিভি ভবনের সামনে, রামপুরা ব্রিজ এলাকায় দুই হাজার রিকশাচালক অবস্থান নিয়েছেন। ফলে ওই রাস্তায় সকাল থেকে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।

রিকশা শ্রমিকদের অবরোধে জনদুর্ভোগ - ছবি: কাশেম হারুন 

তাদের কথা হচ্ছে, আমাদের রিকশা চালিয়ে বউ-পোলাপান নিয়ে চলতে হয়। রিকশা না চালালে কী খাবো? সড়কে আমাদের রিকশা চালাতে দিতে হবে। তিনি বলেন, সড়কে যে অবৈধ গাড়ি চলে সেগুলো কেউ ধরে না, রিকশাচালকদের ধরতে আসে সবাই। আমরা চুরি করি না, কারও মাথায় বাড়ি দেই না, কাজ করে খাই, আমাদের সঙ্গে কেন এমন ব্যবহার? আমরা কাজ করে খেতে চাই।

তালতলার রিকশাচালক মনির হোসেন বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত দাবি না মানা হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবো। আমরা কাজ করে খেতে চাই, আমাদের কাজের সুযোগ দেয়া হোক।

বাড্ডা থানার এসআই সোহেল রানা বলেন, সকাল ৭টা থেকে রামপুরা মালিবাগ সড়ক বন্ধ করে দিয়েছে রিকশাচালকরা। তারা প্রায় দুই হাজার শ্রমিক সড়কে আছেন। পুলিশ তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়ার কাজ করছে। আপাতত রামপুরা সড়কে কোনও যান চলাচল করছে না।
 

খিলগাঁও রেলগেট এলাকায় রিকশা থামিয়ে দেয়ায় আতঙ্কে স্কুল শিক্ষার্থীদের কান্না- ছবি: কাশেম হারুন  

এদিকে রিকশাচালকদের অবরোধে কোনো ধরনের  ভাংচুর নাশকতা বা অনাকাঙ্খিত ঘটনা না ঘটে, এ কারণে প্রগতি সরণির প্রতিটি শাখা সড়কে এবং গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশ র‌্যাবসহ প্রচুর আইন শৃংখলা বাহিনীকে সতর্কাবস্থায় দেখা গেছে। তবে কয়েকটি স্থানে রিকশাচালকদের মারমুখো আচরণেও পুলিশ সহশীলতার পরিচয় দিয়েছে। কৌশলে পুলিশ এ সমস্যার মোকাবেল করে যাচ্ছে। এমনটাই বলেছেন গুলশান বাড্ডা এলাকার উপ-পুলিশ কমিশনার মোস্তাক আহমেদ। 
   
প্রসঙ্গত, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন গত ৭ জুলাই থেকে রাজধানীর বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করেছে। এর মধ্যে ডিএনসিসি’র প্রগতি সরণি ও মিরপুর রোডে রিকশা নিষিদ্ধ করা হয়। ডিএসসিসি তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করে। সে ঘোষণা অনুযায়ী মিরপুর রোডের গাবতলী থেকে আজিমপুর, সায়েন্স ল্যাব থেকে শাহবাগ এবং কুড়িল বিশ্বরোড থেকে খিলগাঁও হয়ে সায়েদাবাদ পর্যন্ত সড়কে রিকশা চলাচল করবে না। ৭ জুলাই থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। এরপরই রিকশাচালকরা আন্দোলনে নেমেছে। 

এইচ এম/বিএস 
 

আরও পড়ুন