দেশের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব সময় সক্রিয় থাকতে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, দেশে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হতে পারে। এ পরিস্থিতিতে কোন মানুষ যেন সাহায্য-সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকালে সচিবালয়ে ডিসি সম্মেলনের তৃতীয় দিনের প্রথম কার্য অধিবেশনের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আবাহাওয়াবীদদের মতে বৃষ্টি আরও হতে পারে। যদি চীন, নেপাল, ভারতে আরও বৃষ্টিপাত হয় এবং সেখানে অবস্থিত ব্রহ্মপুত্র, যমুনার পানি যদি বৃদ্ধি পায়, তাহলে আমাদের বন্যা পরিস্থিতি আরেকটু অবনতি হতে পারে।
বন্যার সকল আগাম প্রস্তুতি নেয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের এবং মাঠ কর্মীদের সামর্থ আছে। বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হলে মানুষকে নিরাপদে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশনা দেয়া আছে। আশ্রয়কেন্দ্রে খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও চিকিৎসাসহ সবকিছুই নিশ্চিত করা হবে।
বন্যায় এখন পর্যন্ত ২০ জেলা আক্রান্ত হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রথমে ১০টি জেলায় বন্যা ছিল। দুইদিন পরে ১৫টি হয়েছে, গতকাল পর্যন্ত ২০টি জেলায় বন্যা কবলিত হয়েছে। প্রত্যেক জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি রয়েছে। প্রত্যেক কমিটিকে কাজ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছি।
ত্রান প্রতিমন্ত্রী জানান, বন্যা কবলিত জেলাগুলো এ পর্যন্ত ৭০০ মেট্রিক টন চাল, প্রতি জেলায় ৪ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার পাঠানো হয়েছে। আর প্রথমে ২ কোটি ৯৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছিল, তারপর আরো ৩৭ লাখ টাকা আমরা গতকাল বরাদ্দ দিয়েছি। শিশুখাদ্যের জন্য এক লাখ টাকা ও গো-খাদ্যের জন্য এক লাখ টাকা বরে প্রতি জেলায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও প্রতি জেলায় ৫০০ করে তাবু পাঠানো হয়েছে।
ডিসি সম্মেলনের বিষয়ে তিনি বলেন, আমরা গৃহহীনদের জন্য দুর্যোগসহনীয় ঘরের কার্যক্রম শুরু করেছি। প্রথম ধাপে ১১ হাজার ৬০৪ টি ঘর নির্মাণ শুরু করেছি। তাদের পরামর্শ ঘরের আয়তন আরও বিস্তৃত করা ও বাজেট বৃদ্ধি। আমরা ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ঘরের বাজেট দিয়েছিলাম ২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা, কিন্তু এবার আমরা তিনলাখ টাকা বাজেট দিয়েছি। চলতি অর্থবছরে আরও ২৩ হাজার ঘর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, বজ্রপাতে মৃত্যু নিরোধের জন্য বজ্রপাত নিরোধক টাওয়ার বসানোর প্রস্তাব করেছেন ডিসিরা। এছাড়াও দুর্যোগ ও বন্যার কাজের জন্য মটর বোটের সংখ্যা কম। তারা সেটি বাড়াতে বলেছে, সারা বছর যাতে জ্বালানি থাকে সেটি নিশ্চিত করতে বলছেন। বন্যা কবলিত জনগণকে নিরাপদ আশ্রয়ে নেয়ার জন্য নৌকার প্রস্তাবও এসেছে। আগে আমরা এক লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলাম, তারা সেখানে তিন লাখ বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন। আমরা বলেছি তিন লাখ টাকাই দেয়া হবে।
এমএএম /টিএফ