ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন কর্তৃক ইজারাকৃত পশুর হাটের নির্ধারিত সীমানার বাহিরে পশুর হাট বসাতে দেয়া হবে না এবং চামড়া পাচার প্রতিরোধে ঢাকার বাহিরে কোন চামড়া যেতে পারবে না।
সোমবার (২২ জুলাই) বেলা ১১টায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে আসন্ন পবিত্র ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে ঢাকা মহানগর এলাকায় কোরবানির পশু হাটের নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত এক সমন্বয় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
এবারের ঈদ-উল আজহা উপলক্ষে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। তার মধ্যে পশুর হাট কেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা, মানি এস্কর্ট ও জালনোট শনাক্তকরণ এবং চামড়া ক্রয়-বিক্রয় ও পাচার রোধ সংক্রান্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এছাড়াও নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে থাকবে স্বর্ণের দোকান, মার্কেট, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা, বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল এবং রেলওয়ে স্টেশন কেন্দ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা, পোশাক শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধ ও পর্যায়ক্রমে ছুটি দেয়া এবং ঈদ ও ঈদ পরবর্তী ব্যবস্থা।
পশুর হাটের নিরাপত্তা সম্পর্কে ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমাদের সবার সাথে সমন্বয় করে একটি সুন্দর কুরবানির পশুর হাটের ব্যবস্থা করতে হবে। ঢাকা শহরে অনুমোদিত পশু হাটে থাকবে পুলিশের কঠোর নজরদারি। পশুবাহী ট্রাক যেখানে যেতে চায়, তাকে সেখানে যেতে দিতে হবে। কোন অবস্থায় তাকে বাধা দেয়া যাবে না। প্রত্যেকটি ট্রাক তার গন্তব্য স্থানের নাম বড় করে ব্যানার বানিয়ে ট্রাকের সামনে ঝুলিয়ে দিবে। কোন ভাবেই এক হাটের পশু অন্য হাটে জোর করে নামানো যাবে না। যদি এমন কেউ করে তাকে ফৌজদারি অপরাধে আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি বলেন, নির্ধারিত হাসিলের অতিরিক্ত আদায় করা যাবে না। হাসিলে টাকার হার বড় ব্যানারে প্রকাশ্যে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। পুলিশের মানি এস্কর্ট ছাড়া কোনো বড় অংকের নগদ টাকা বহন না করতে আহ্বান জানাই। বাহিরের ভ্রাম্যমাণ দোকান ও হকার হাট এলাকায় ঢুকতে পারবে না। ইজারাদাররা নির্দিষ্ট খাবার দোকান ঠিক করে দিবেন।
উক্ত সমন্বয় সভার আলোচনায় আরও উঠে আসে- প্রত্যেক পশুর হাটে থাকবে পর্যাপ্ত সংখ্যক সাদা পোশাকে ও ইউনিফর্মে পুলিশ। ইজারার চৌহদ্দির বাহিরে কোন অনুমোদিত হাট বসতে দেয়া হবে না। প্রত্যেক হাটে থাকবে পুলিশের কন্ট্রোল রুম ও ওয়াচ টাওয়ার। পশুর হাটে ও তার আশপাশে জনসচেতনতামূলক ব্যানার দৃশ্যমান স্থানে টানানো ও প্রচার প্রচারণা করতে হবে। জাল টাকা শনাক্তকরণের জন্য পুলিশ কন্ট্রোল রুমে থাকবে জাল টাকা শনাক্তকরণ মেশিন। এছাড়াও হাট এলাকায় বসানো হবে সিসি ক্যামেরা। সার্বক্ষণিক বিদ্যুতের জন্য ইজারাদাররা উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন জেনারেটরের ব্যবস্থা নিবেন। হাটের চৌহদ্দি বাঁশ দিয়ে ঘেরাও করে রাখতে হবে। পরিচয়পত্রসহ পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দিবেন ইজারাদাররা।
তিনি আরও বলেন, চামড়া ক্রয়-বিক্রয় এবং কাঁচা চামড়া পাচার রোধে ঢাকা হতে বহিঃগমন পথগুলোতে বসানো হবে চেকপোস্ট ও নদী পথে বাড়ানো হবে নৌ পুলিশের টহল। ঢাকার বাহির থেকে শুধুমাত্র কাঁচা চামড়াবাহী যানবাহন ঢাকায় প্রবেশ করতে পারবে। কোন কাঁচা চামড়াবাহী যানবাহন ঢাকা থেকে বাহিরে যেতে পারবে না।
২০১৯ সালের ঈদু-উল-আজহায় ঢাকা মহানগরে অনুমোদিত পশুর হাট থাকবে মোট ২৭টি। যার মধ্যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে- ১৫টি, উত্তর সিটি করপোরেশনে রয়েছে- ১১টি পশুর হাট এবং ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অনুমোদনে ১টি পশুর হাট থাকবে।
উক্ত সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলেন- ডিএমপি ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ গোয়েন্দা সংস্থার ও সিটি করপোরেশনের প্রতিনিধি, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, দোকান মালিক সমিতি, হাট ইজারাদার, চামড়া ব্যবসায়ীসহ অন্যান্য ব্যক্তিবর্গ।
টিএস/টিএফ