• ঢাকা
  • বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: আগস্ট ৪, ২০১৯, ০২:৪৬ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : আগস্ট ৪, ২০১৯, ০২:৪৬ পিএম

দাম বেশি অভিযোগ ক্রেতার 

নবীগঞ্জে জমে উঠেছে পশুর হাট

নবীগঞ্জে জমে উঠেছে পশুর হাট

আর মাত্র কয়েকদিন তারপর মুসলিম উম্মার দ্বিতীয় প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ-উল আজহা। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলাজুড়ে জমে উঠেছে কোরবানির পশুর হাট। জেলার সর্ববৃহৎ ও বিভাগের অন্যতম বৃহৎ পশুর হাট উপজেলার দিনারপুর অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী গজনাইপুর ইউনিয়নের জনতার বাজার পুরোদমে জমে উঠেছে। এছাড়াও নবীগঞ্জ পৌর এলাকার সালামতপুর, ইনাতগঞ্জ, সৈয়দপুর বাজার, নতুন বাজার, কাজির-বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বসতে শুরু করছে পশুর হাটগুলো। হাটগুলো ক্রেতাদের পদ চারণায় সরগরম থাকলেও দাম সাধ্যের বাইরে থাকায় অনেক ক্রেতাই দাম কমার অপেক্ষা করছেন। তবে, দুই একদিনের মধ্যে ক্রেতারা কোরবানির পশু কিনতে শুরু করবেন বলে বলে মনে করছেন হাটে পশু বিক্রি করতে আসা ব্যবসায়ীরা।

সরেজমিনে জনতার বাজারের পশুর হাটে ঘুরে কথা হয় ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে। অন্যান্য বছরের তুলনায় দাম কিছুটা বেশি মনে করছেন এ হাটে আসা ক্রেতারা। লোক সমাগম অনেক হলেও বেচা বিক্রি জমে উঠেনি বলে জানালেন একাধিক বিক্রেতা। 
ঈদ যত কাছে আসছে পশুর হাটের ভিড় ও আস্তে আস্তে বেড়েই চলছে। শেষ মুহুর্তে আরো বেশি ভিড় বাড়বে এবং রাতব্যাপী পর্যন্ত বেচা কেনা চলবে বলে জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতা ও গরুর বাজার কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে বাজারগুলোতে জাল টাকা শনাক্তকরণে কোনো যন্ত্র না থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতার ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।

সরেজমিনে বিভিন্ন পশুর হাট-ঘুরে দেখা যায়, সম্পূর্ণ হাট ছিল গরু, ছাগলসহ বিভিন্ন পশুতে পরিপূর্ণ। তবে দাম বেশি থাকায় মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্ত মানুষকে হিমশিম খেতে দেখা গেছে। তবে অন্য বছরের তুলনায় দাম একটু বেশি। অনেক ক্রেতাদের কোরবানির পশু না কিনে খালি হাতে ফিরে যেতে হয়েছে। তবে আরো কয়েক দিন অপেক্ষা করে কোরবানির পশু কিনবেন বলে জানিয়েছেন অনেকে। বাজারে দাম বেশি থাকায় অনেক বিক্রেতাকে ও তাদের আমদানিকৃত গরু বিক্রি না করে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে হয়েছে। 

এদিকে, ডিজিটাল তথ্য প্রযুক্তি ছোঁয়ায় আরো একধাপ এগিয়ে জমে উঠেছে পশুর হাট। অনেকেই স্মার্ট ফোনে ফোর-জি, থ্রি জি নেটওয়ার্কের আওতায় ইমো, স্কাইপিসহ বিভিন্ন অ্যাপ এর মাধ্যমে ভিডিও কলে বিদেশে অথবা বাড়িতে থাকা লোকজনকে গরু দেখাচ্ছেন এবং তারা ভিডিও কলে গরু দেখে দেখে পছন্দ করছেন কোনটা কিনবেন। এ ছাড়াও অনেকেই গরুর ছবি তুলে হোয়াটস আপের মাধ্যমে তাদের স্বজনদের শেয়ার করছেন।

উপজেলার গজনাইপুর গ্রামের ক্রেতা লুৎফুর রহমান জানান, দেশীয় গরু কিনতে বাজারে এসেছি, বাজারে দাম খুব বেশি তাই কোরবানির গরু কিনতে হিমশিম খাচ্ছি। আগামী বাজারে দাম আরো কমতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
 
উপজেলার দেবপাড়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুল কাদির পশু বিক্রি করতে এসেছেন এ হাটে। তার সাথে কথা হলে তিনি জানান, অনেকেই আসছেন কিন্তু দেখে দেখে চলে যাচ্ছেন। ক্রেতারা অভিযোগ করছেন গরুর দাম বেশি। তাই কোরবানির পশু না কিনে চলে যাচ্ছেন। যার ফলে আমরা আশানুরূপ বিক্রি না করতে পারায় সেগুলো নিয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে। একটি গরু ৮০ হাজার টাকা দাম চাইলে ও ক্রেতারা ৫০/৬০ হাজার টাকা দাম করেছেন। তাই বিক্রি করতে পারিনি। তবে ঈদের আগের বাজার আরো অনেক ভাল হবে বলে আশা করছি।

জনতার বাজারে গরু বিক্রি করতে আসা আব্দুল গফুর জানান, দীর্ঘদিন ধরে গরু লালন-পালন করেছি লাভের আশায়, যদি ভারতীয় গরু বাজারে না আসে তাহলে আমাদের দেশীয় গরুগুলো ন্যায্য মূল্য পাবো বলে আশাবাদী।

গজনাইপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের কায়েদ বলেন, নবীগঞ্জে ঐতিহ্যবাহী দিনারপুর জনতার বাজার পশুর হাটে বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্রেতারা পশু নিয়ে আসেন। অন্যান্য বছরের চেয়ে এ বছর দাম একটু বেশি এবং ভারতীয় গরু বাজারে আসায় দেশীয় গরু বিক্রেতারা হিমশিম খাচ্ছেন। তাই ক্রেতারাও দাম চড়া হওয়ায় গরু কিনতে পারছেন না। অনেকেই শেষ বাজারের অপেক্ষা করছেন। 

নবীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান ইমদাদুর রহমান মুকুল বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এ বছরও নির্বিঘ্নে ক্রেতা বিক্রেতারা পশু ক্রয় বিক্রয় করছেন। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে। 

কেএসটি

আরও পড়ুন