রাজধানীসহ সারা দেশে পরিবহন মালিক ও চালকদের মধ্যে গাড়ি রিকুইজিশন আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাজধানীর পাশাপাশি বিভাগীয় শহর ও জেলা পর্যায়ে প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের মোড়ে মোড়ে গাড়ি রিকুইজিশন করছে পুলিশ। রেহাই পাচ্ছে না অ্যাম্বুলেন্সও। এ কারণে অনেক মালিক রাস্তায় যানবাহন নামাচ্ছেন না। এর ফলে সড়কগুলোতে গণপরিবহনের সংখ্যা কমে গেছে।
নির্বাচন ঘিরে রাজধানীসহ সারাদেশে নির্বাচনি দায়িত্ব পালন করার জন্য গাড়ি রিকুইজিশন করছে পুলিশ। এর মধ্যে রয়েছে বাস, মিনিবাস, মাইক্রোবাস, জীপ, পিকআপ, কার। বাদ যাচ্ছে না অ্যাম্বুলেন্সও। অন্য দিকে ভোট দেওয়ার জন্য অনেকেই ছুটছেন নিজ নিজ এলাকায়। এ কারণে রাজধানী শহর ফাঁকা হতে শুরু করেছে। মহাসড়কেও গাড়ির সংখ্যা কমে গেছে।
সারাদেশে প্রায় ৩০ হাজার গাড়ি রিকুইজিশনের টার্গেট রয়েছে পুলিশ বিভাগের। তা ছাড়া একাধিক গোয়েন্দা সংস্থাও রয়েছে। সে সকল সংস্থা গাড়ি সংকটে রয়েছে তারাও রিকুইজিশন গাড়ি নিচ্ছে।
একদিকে রিকুইজিশন, অন্য দিকে নির্বাচনি প্রচারণায় ভাড়া গাড়ি নেয়ার ফলে রাজধানীসহ সারাদেশের বিভাগীয় শহরে ‘রেন্ট এ কার’ এ গাড়ির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।
এলিফ্যান্ট রোডের বাসিন্দা এসএম শাহজাহান কবির জানান, তার ব্যক্তিগত গাড়ি ঢাকা মেট্রো চ- ১৫ ০০৮০ (নোয়াহ) গত রোববার রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড লিংক রোডে রিকুইজিশন করা হয়। তার গাড়ির চালক জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, দায়িত্বরত সার্জেন্টকে অনুরোধ করেও রিকুইজিশন থেকে রেহাই পাননি।
রেন্ট এ কার এর একজন মালিক সিদ্দিক তার ভাড়া চালিত নোয়াহ গাড়ি ( ঢাকা মেট্রো চ-৫৩ ০৪৯১) রাজধানীর দারুস সালাম টেকনিক্যাল মোড়ে সার্জেন্ট ধরে। না গেলে ডাম্পিংয়ে পাঠাবে বলে হুমকি দেয়। তবে টাকা দিয়ে রেহাই পেয়েছেন বলে সিদ্দিক জানান।
ঢাকা মেট্রো ছ- ৭১ ১৯৪২ নম্বরের এক অ্যাম্বুলেন্স মালিক আবুল কালাম জানান, মরদেহ নিয়ে বরিশাল গিয়েছিল তার অ্যাম্বুলেন্সটি। ঢাকায় ফেরার পথে শিকারপুর ও দোয়ারীপাড়া মোড়ে সার্জেন্ট তার অ্যাম্বুলেন্স রিকুইজিশনের হুমকি দেন। এ সময় কৌশলে সে ফিরে আসে ঢাকায়। এমনিভাবে বগুড়া পুলিশ লাইনের মোড়ে ঢাকা মেট্রো ছ- ৭১ ১৩২৩ অ্যাম্বুলেন্স আটক করে এক সার্জেন্ট। সেখানে অর্থদণ্ড দিয়ে ছাড়া পান চালক জহিরুল ইসলাম।
এ বিষয়ে পুলিশের ডিআইজি ( হাইওয়ে ) আতিকুল ইসলাম জাগরণকে বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আইন-শৃংখলা বাহিনী এক সঙ্গে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি সংখ্যক সদস্য দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু পরিবহন সঙ্কটের কারণে গাড়ি রিকুইজিশন করা হচ্ছে। এটা জাতীয় স্বার্থ ও রাষ্ট্রীয় কাজ। এ সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা দুঃখিত।
এইচএম/এসএমএম