কার্যত লকডাউনের এই সময় মানুষকে বাড়িতে থাকার আর্জি জানাতে বিভিন্ন জেলায় পুলিশ দলবদ্ধ হয়ে গান গেয়ে গেয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
পুরনো কিছু জনপ্রিয় গানের শব্দ এদিক-ওদিক করে অনেকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন আবার অনেক পুলিশ ইউনিট নিজেরাই গান রচনা করে সুর তুলছেন।
যেমন চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানার পুলিশ সদস্যদের দেখা যায় থানার সামনে দাঁড়িয়ে গানে গানে করোনাভাইরাসের ব্যাপারে সচেতনতার নানা পরামর্শ দিচ্ছেন।
সাব ইন্সপেক্টর মঞ্জুরুল আলমের কথা ও সুরে উঠে এসেছে কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হলে কি করবেন, এ থেকে বাঁচার উপায় কি, কেন বাড়িতে থাকা প্রয়োজনসহ আরও নানা প্রশ্নের উত্তর।
মানুষকে বাড়ির ভেতরে থাকার ব্যাপারে সচেতন করতেই বিনোদন রূপে বিষয়টি উপস্থাপনের কথা জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মাহবুবুর রহমান।
গানে গানে সচেতনতার কারণেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সহজেই সব শ্রেণির মানুষের কাছে এই বার্তা পাঠানো সম্ভব হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
একইভাবে ঢাকার গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার পুলিশ সদস্যরা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে রেকর্ডিং করা গানের সাথে গলা মিলিয়ে এবং হাতে তালি দিয়ে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালিয়েছেন, যেন মানুষ বাড়িতেই থাকেন।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহারের নেতৃত্বে চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকার মহাসড়কে জেলা পুলিশ ব্যতিক্রমধর্মী এই প্রচারণা চালায়।
এ সময় অতিথি হিসেবে দেখা যায় মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আ ক ম মোজাম্মেল হককে।
শুরুতে লিফলেট বিতরণ ও মাইকিং-এর মাধ্যমে প্রত্যাশিত কোন সাড়া না পেয়ে এই ব্যতিক্রমী উপায়ে প্রচারণা চালানোর কথা জানান জেলার পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার।
শামসুন্নাহার বলেন, আমরা যখন গান গেয়ে প্রচার করলাম তখন দেখি যে আমরা বেশি মানুষের মনোযোগ নিতে পারছি। এই ভিন্নমাত্রার গান মানুষের মনে গেঁথে গেছে। তারা মাইকিংয়ের চাইতে গানটাকেই বেশি এপ্রিশিয়েট করছে।
এছাড়া কুমিল্লাতেও গানে গানে সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচারণা চালিয়েছে পুলিশ।
জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নূরুল ইসলাম নিজে গানটি রচনা করেন।
নগরীর পুলিশ লাইন্স থেকে পুলিশের সদস্যরা এই গানের সুরে একটি শোভাযাত্রা বের করেন এবং বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন।
কুমিল্লা জেলা পুলিশের ফেসবুক আইডিতে ব্যতিক্রমধর্মী প্রচারণাটি সরাসরি সম্প্রচার হওয়ার মুহূর্তেই হাজার হাজার মানুষ সেটা শেয়ার করে।
এ ব্যাপারে মি. ইসলাম বলেন, দিনের বেলা কেউ চেক পয়েন্টে ডিউটি দেয়। কেউ গাড়ি রিকশা আটকায়। কিন্তু সন্ধ্যার পরে বলতে গেলে সব ধরনের মুভমেন্ট বন্ধ হয়ে যায়।
সেজন্য এই রাতের বেলা মানুষকে বিনোদনের মাধ্যমে আমরা বোঝানোর চেষ্টা করেছি। মানুষজনও বারান্দা থেকে তালি দিয়ে আমাদের ধন্যবাদ জানিয়েছে। বিবিসি।
এসএমএম