• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৭, ২০২০, ০৭:৫০ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ১৭, ২০২০, ০৭:৫০ পিএম

করোনার ভয়ের অজুহাতে ১১ দিন ধরে লাপাত্তা ল্যাব টেকনোলজিস্ট

করোনার ভয়ের অজুহাতে ১১ দিন ধরে লাপাত্তা ল্যাব টেকনোলজিস্ট
মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (এমটি) অনিমেষ সাহা ● জাগরণ

বাগেরহাটে সন্দেহভাজন করোনা রোগীর পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহের কথা শুনে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে গেছে প্যাথলজি বিভাগের কর্মকর্তা। গত ১১ দিন যাবৎ আত্মগোপনে থাকা মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (এমটি) অনিমেষ সাহা না থাকায় বন্ধ রয়েছে প্যাথলজি বিভাগের পরীক্ষা-নিরীক্ষার সব কার্যক্রম। তিনি পালিয়ে থাকায় দুর্ভোগে পড়েছে চিকিৎসারত ও বিভিন্ন দিক থেকে আসা সাধারণ রোগীরা। তবে কাউকে না জানিয়ে সরকারের জরুরি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান খেকে দীর্ঘ ১১ দিন পালিয়ে থাকা এ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এখনও কোনও  প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে হাসপাতালজুড়ে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।

খুলনা বিভাগের তথা দক্ষিণাঞ্চলের বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর নগরী মোংলা উপজেলার প্রায় ২ লাখ জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ১৯৯৮ সালের চালু হয় ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ২৫ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র মাত্র ১০/১২জন। এর মধ্যে ৫ জন চিকিৎসক নিয়মিত অফিস করছেন আর বাকীরা আছেন কাগজে-কলমে। এখানে প্যাথলজি বিভাগে ৩ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট থাকার কথা।আছেন মাত্র ১জন। সরকারের স্বাস্থ্য শাখার লোকবল কম থাকায় এ শাখায় দীর্ঘদিন যাবৎ একজন (এমটি) দিয়ে চলে আসছিল হাসপাতালের প্যাথলজি বিভাগের কার্যক্রম। কিন্ত করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের ফলে দেশের সব স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসকসহ অন্যান্য শাখার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর ছিল কড়া নির্দেশনা। তারমধ্যেও বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারের কঠোর নির্দেশনা থাকা সত্বেও মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একমাত্র মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অনিমেষ সাহা অফিসে আসা বন্ধ করে দেয়। অফিসে আসলেও তিনি প্যাথলজি বিভাগে না বসে অনত্র ঘুরে-বেড়াতেন বলে অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে।

গত ৭ এপ্রিল মোংলা পোর্ট পৌর শহরের খানজাহান আলী সড়কের হাকিম হাওলাদারের ভাড়াটিয়া শাহিনুর আক্তার নামের এক গৃহবধূ করোনাভাইরাস সন্দেহে চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকদের নির্দেশনা দেন উপজেলা প্রশাসন। পাশাপাশি শাহিনুর আক্তারকে আইসোলেশনে রেখে নমুনা সংগ্রহ করে তা খুলনা মেডিকেলে পাঠানোর জন্য বলে। এ খবর শুনেই মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (এমটি) কর্মকর্তা অনিমেষ সাহা হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। দীর্ঘ ১১ দিন প্যাথলোজি বিভাগ বন্ধ থাকায় দূর-দূরান্ত থেকে আসা রোগীরা পড়েছেন চরম বিপাকে। আত্মগোপনে থাকা অনিমেষের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ বলেও স্থানীয়দের অভিযোগ।

মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. জীবিতেষ বিশ্বাস জানায়, কয়েকদিন যাবৎ প্যাথলোজিস্ট অনিমেষ সাহা হাসপাতালে অনুপস্থিত। সম্ভবত করোনাভাইরাস সংক্রান্ত বিষয় একটু ভীত হয়ে পড়েছে। মোবাইল ফোনও বন্ধ, তবে তার স্ত্রীর ফোনে যোগাযোগ করা হচ্ছে।

বাগেরহাট জেলা সিভিল সার্জন ডা. হুমায়ুন কবির দৈনিক জাগরণকে বলেন, ১১ দিন পালিয়ে থাকার ঘটনাটি তার জানা নাই, তবে ১৬ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) দুপুরে অনিমেষ সাহার স্বেচ্ছায় অবসরের একটি আবেদন পেয়েছি। স্বেচ্ছায় অবসরের সময় হয়েছে কিনা বা সরকারের এ জাতীয় দুর্যোগ মুহূর্তে পালিয়ে থাকার বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে, তারাই ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

এসএমএম

আরও পড়ুন