• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৩, ২০২১, ১১:২২ এএম
সর্বশেষ আপডেট : এপ্রিল ২৩, ২০২১, ১১:২২ এএম

‘লকডাউনে’ কমেছে মুরগির দাম

‘লকডাউনে’ কমেছে মুরগির দাম

গত কয়েকমাস ধরে ঊর্ধ্বমুখী থাকা মুরগির দাম অনেকটাই কমে ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে এসেছে। ‘লকডাউনে’ কারণে বাজারে ক্রেতা না থাকায় দাম কমছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, অনেকটাই ক্রেতাশূন্য হাঁস-মুরগির বাজার। পুরো বাজার জুড়ে ক্রেতা মাত্র হাতেগোনা কয়েকজন। ক্রেতা না থাকায় অলস সময় পার করছেন বিক্রেতারা। একজন ক্রেতা দেখতে পেলেই হাঁক ডাক দিচ্ছেন তারা।

বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত সপ্তাহের তুলনায় সব ধরনের মুরগির দাম কমেছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪৫ টাকা। গত সপ্তাহে এই মুরগির দাম ছিল ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকা। এর আগের সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকা।

অর্থাৎ, গত দুই সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ টাকা। শুধু ব্রয়লার মুরগি না দাম কমেছে অন্যান্য জাতের মুরগিরও। গত সপ্তাহে ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা বিক্রি করা সোনালী মুরগি এই সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা। লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা কেজি। গত সপ্তাহে এই মুরগির দাম ছিল ২৩০ টাকা।

মুরগির দাম কমাতে ক্রেতাদের মধ্যে অনেকটাই স্বস্তি ফিরে এসেছে। কয়েকজন ক্রেতা জানান, গত কয়েক দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে মুরগির দাম নিম্ন ও মধ্যবিত্ত ক্রেতাদের নাগালের বাইরে ছিল। দ্রব্যমূল্যের এই ঊর্ধ্বগতির মধ্যে মুরগির দাম কমায় অনেকটা ভালো হয়েছে। দাম আরেকটু কমলে আরো ভালো হতো।

দাম কমার কারণ হিসেবে জিয়াউল হক নামের এক বিক্রেতা জানান, ‘লকডাউনে’র কারণে বাজারে ক্রেতা কম। হোটেল রেস্টুরেন্টগুলো বন্ধ থাকায় তাদের একেবারেই বেচাবিক্রি নেই। তাই মুরগির দাম কমেছে।

হারুনুর রশিদ নামের আরেক বিক্রেতা বলেন, “আগে প্রতিদিন মুরগি বিক্রি করতাম প্রায় ৩০০ কেজি। যার মধ্যে হোটেলগুলোতেই বিক্রি করতাম ২০ থেকে ২৫০ কেজি। এখন সব মিলিয়ে ১৫০ কেজিও বিক্রি করতে পারি না। তাই মুরগি কম তুলি। আজকেও মাত্র ১০৮ কেজি মুরগি তুলছি। খামারিরা লোকসান দিয়ে মুরগি বিক্রি করছে।”

সবজির দাম কিছুটা কমলেও এখনো স্বস্তি ফেরেনি। বর্তামানে প্রতি পিস জলকচু বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, কুমড়া ২০ থেকে ৩০ টাকা, চালকুমড়া ৩০ থেকে ৫০ টাকা, লাউ ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৩০ টাকা, মানকচুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, শসা ৪০ টাকা থেকে ৬০ টাকা, করলা ৩০ থেকে ৪০ টাকা, টমেটো ২০ থেকে ৩০ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পটল ৩০ থেকে ৫০ টাকা, বরবটি ৩০ টাকা, কাঁচা আম ৩০ থেকে ৪০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, মরিচ ৩০ থেকে ৪০ টাকা, সজনে ডাটা ৪০ থেকে ৬০ টাকা, লতি ৫০ থেকে ৭০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৭০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, লাল আলু ৪০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, ধুন্দুল ৬০ টাকা, ঝিঙ্গা ৮০ টাকা। এছাড়া কাঁচা কলার হালি ৩০  থেকে ৫০ টাকা, লেবু ২০ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে আটাশ জাত ছাড়া আগের মতোই উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে সব ধরনের চাল। বর্তমানে প্রতি কেজি মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৬২ থেকে ৬৩ টাকা, নাজিরশাইল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬৬ টাকা, স্বর্ণা (গুটি) বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকা, স্বর্ণা (পাইজাম) বিক্রি হচ্ছে ৪৭ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে বাজারে নতুন চাল আসায় কেজিতে ৪ টাকা কমেছে আটাশ জাতের চাল। বর্তমানে এই জাতের চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৭ থেকে ৪৮ টাকা।

চাল বিক্রেতা শাজাহান জানান, নতুন আটাশ উঠেছে, তাই দাম কমেছে। অন্য জাতের চালও উঠলে দাম কমবে। আগামী মাসে শুরুর দিকে নতুন মিনিকেট বাজারে আসতে পারে।

আরেক বিক্রেতা বলেন, “ঈদের আগে হয়তো মিনিকেট বাজারে আসবে। তখন এর দাম কমবে।”

তবে তেলের দাম আগের মতোই আছে। বর্তমানে পুষ্টি ব্র্যান্ডের ৫ লিটারের সয়াবিন তেলের বোতল বিক্রি হচ্ছে ৬৩০ টাকা, রূপচাঁদা ৬৪০ টাকা, বসুন্ধরা ৬৩০ টাকা, তীর ৬৩০ টাকা, মুসকান ৬২০ টাকা। এছাড়া খোলা সয়াবিন তেল ১২০ টাকা লিটার এবং পাম ১০৫ টাকা লিটার বিক্রি হচ্ছে।

বর্তমানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা, ভারতীয় রসুন ১১০ টাকা, দেশি রসুন ৬০ টাকা এবং দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা।