
গুম হওয়া স্বজনদের ফিরে পেতে এই সরকারের কাছে কেঁদে কোনো লাভ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না।
মান্না বলেন, ‘‘এই সরকারের কাছে কেঁদে কোনো লাভ নেই। গত ৮ বছর এভাবে স্বজনরা কান্নাকাটি করেছেন। তাদের কান্না দেখে আমার চোখেও পানি এসেছে। কিন্তু কোনো ফলাফল হয়নি। এখন আর কান্না নয়, ঐক্যবদ্ধভাবে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’’
আন্তর্জাতিক গুম সপ্তাহ উপলক্ষে ‘মায়ের ডাক’র উদ্যোগে শুক্রবার (২৮ মে) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন তিনি।
মাহমুদুর রহমান মান্না উল্লেখ করেন, ‘‘একটি শিশু আজকে বক্তব্য দিতে গিয়ে বলেছে, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি দেখে যান আমরা এখানে যারা দাঁড়িয়েছি, কান্না করছি, স্বজনদের ফিরে পাওয়ার জন্য আবেদন করছি, এটি মিথ্যা নয়।’’
মান্না বলেন, ‘‘আমি আপনাদের আগেও বলেছি, আজও বলছি—আপনারা সম্পূর্ণ অনুষ্ঠানটি ভিডিও ধারণ করে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে দিন। এর আগে এই অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বৃদ্ধ মা হাজেরা খাতুন। তিনি এখন আসতে পারেন না। কারণ কাঁদতে কাঁদতে তিনি বিছানায় শায়িত আছেন। কত মা মৃত্যুবরণ করেছেন, কত বাবা কাঁদতে কাঁদতে মারা গেছেন; নতুন করে সেই তালিকা করতে হচ্ছে। কিন্তু গুম হওয়া স্বজনরা কেউ ফিরে আসছে না।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাকেও ২৩ ঘণ্টা গুম করা হয়েছিল। যদিও আমার সঙ্গে অত খারাপ ব্যবহার করেনি। কিন্তু এই ২৩ ঘণ্টা মানসিক যে যন্ত্রণা, সেই যন্ত্রণা আমি ও আমার পরিবার এখনো হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করছি।’’
মায়ের ডাকের সমন্বয়কারী আফরোজা ইসলাম আঁখির সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতির চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসার পরিচালনায় মানববন্ধনে স্বাগত বক্তব্য দেন অধিকারের পরিচালক নাসির উদ্দিন এলান।
সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন জাতীয় মুক্তি কাউন্সিলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম লালা, দৃকের প্রতিষ্ঠাতা শহীদুল আলম, ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর, গুম হওয়া এম ইলিয়াস আলীর ছেলে ব্যারিস্টার আবরার, গুম হওয়া সাজেদুল ইসলাম সুমনের বড় বোন মারুফা ইসলাম ফেরদৌসী, গুম হওয়া মাইকেল চাকমার পক্ষে পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের নেতা রিপন জ্যোতি চাকমা, গুম মনির হোসেনের বড় ভাই শহিদুল্লাহ, গুম ড্রাইভার কাউসারের মেয়ে লামিয়া আক্তার মিম, গুম মো. তারিকুল ইসলাম ঝন্টুর মা হাসিনা বেগম, গুম ইসলাম হোসেন বাতেনের মেয়ে আনিসা ইসলাম ইনশা, গুমফেরত মেহেদি হাসান, গুমফেরত তারেক, গুম হওয়া রামপুরা থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন তপুর মামা কামাল হোসেনসহ গুম হওয়া পরিবারের সদস্যরা।