• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: নভেম্বর ১২, ২০২২, ১২:১৬ এএম
সর্বশেষ আপডেট : নভেম্বর ১২, ২০২২, ১২:১৬ এএম

সিলেটে পুরোনো কূপ পুনঃখনন

মিলতে পারে ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস

মিলতে পারে ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস
ছবি ● সংগৃহীত

দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলোর পুরনো কূপ ওয়ার্কওভারের মাধ্যমে গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রথম উদ্যোগেই অনেকটা সফল বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম এক্সপ্লোরেশন অ্যান্ড প্রডাকশন কোম্পানি লিমিটেডের (বাপেক্স)।

খুব শিগগরই নতুন ও পুরাতন গ্যাসকুপের নাম যুক্ত হবে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা।

সময়ের আগেই সিলেট বিয়ানিবাজারের ১ নম্বর কূপের খনন ও উত্তোলন প্রক্রিয়ার কাজ শেষ।

শুক্রবার (১১ নভেম্বর) পরীক্ষামূলক পর্যালোচনার জন্য বেলা ১১টায় গ্যাসকূপ পরিদর্শনে আসেন বাপেক্স কর্মকর্তারা।

পরিদশর্ন শেষে কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রায় ৪০ বছরের পুরোনো কূপ থেকে বাপেক্সের প্রকৌশলীরা কারিগরি সকল সীমাবদ্ধতাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সফলতা অর্জন করেছেন।

সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড সূত্রে জানা যায়, সিলেট গ্যাস ফিল্ডসের অধীন বিয়ানীবাজার গ্যাসক্ষেত্রে দুটি কূপ রয়েছে। এর মধ্যে ১ নম্বর কূপ থেকে ১৯৯৯ সালে উৎপাদন শুরু হয়। ২০১৪ সালে তা বন্ধ হয়ে যায়। ফের ২০১৬ সালের শুরুতে উৎপাদন শুরু হয়ে আবার ওই বছরের শেষদিকে বন্ধ হয়। এর পর থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকা এই কূপে ১০ সেপ্টম্বর থেকে আবার খনন শুরু হয়।

খননকাজের শুরুতে ধারণা করা হয়েছিল এ কূপ থেকে প্রতিদিন ৭ মিলিয়ন বা ৭০ লাখ ঘনফুট গ্যাস মিলতে পারে। তবে খনন শেষে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, এ কূপ থেকে প্রতিদিন ১০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের (এসজিএফএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, আরও কিছু কার্যক্রম শেষে শিগগিরই আমরা এ কূপ থেকে উৎপাদন শুরু করতে পারব। খনন শুরুর আগে ডিপিপিতে ধরা হয়েছিল এখানে প্রতিদিন ৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মিলতে পারে। তবে এখন মনে হচ্ছে আরও বেশিই পাওয়া যাবে।

এসজিএফএলের অধীন বিয়ানীবাজারের কূপ ছাড়াও গোলাপগঞ্জের কৈলাশটিলা-৮ ও গোয়াইনঘাট-১০ নম্বর কূপ খনন এবং রশিদপুরে একটি পাইপলাইন স্থাপন প্রকল্পের কাজ চলছে। এসব প্রকল্পের কাজ শেষে এসজিএফএলের গ্যাস উৎপাদন আরও বাড়বে। দুটি প্রকল্পের আওতায় বিয়ানীবাজার ফিল্ড এবং ব্লক-১৩ ও ১৪-এর আওতায় ডুপিটিলা, বাতচিয়া, হারারগঞ্জ, জকিগঞ্জ ও সিলেট সাউথে ত্রিমাত্রিস সিসমিক জরিপ কাজ সম্পন্নের পথে।

মিজানুর রহমান আরও জানান, এতে ২০২৩ সালের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। সব প্রকল্প বাস্তবায়নের পর ২০২৫ সালের মধ্যে সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেড থেকে দৈনিক গ্যাস উৎপাদন ১৬৪ মিলিয়ন ঘনফুট বৃদ্ধির আশা রয়েছে।

বাংলাদেশে রাষ্ট্রয়াত্ব তেল গ্যাস অনুসন্ধানকারী এ প্রতিষ্ঠান আরও জানায়, আগামী তিন মাসের মধ্যে আরও দুটি নতুন কূপ খননের কাজ শেষ হবে। একইভাবে যে আরও ৪৫টি কূপ রয়েছে, তার কাজও চলমান থাকবে।

এমন কূপ খনন তুলনামুলক অনেক সাশ্রয়ী বলে জানান খননের কাজে নিয়োজিতরা। তারা বলছেন, সম্ভাব্যতা যাচাই করে আরও ৪টি কূপ খননের কাজ শুরু হবে।

দেশে বর্তমানে ২৮টি আবিষ্কৃত গ্যাসক্ষেত্র রয়েছে। এসব গ্যাসক্ষেত্রে প্রমাণিত মজুতের পরিমাণ ২১ দশমিক ৪ ট্রিলিয়ন বর্গফুট (টিসিএফ)। আরও ৬ টিসিএফ রয়েছে সম্ভাব্য মজুদ। এ সাফল্যের বিষয়ে বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মুহাম্মদ আলী বলেন, আমাদের সীমাবদ্ধতা ছিল। সম্পূর্ণ দেশীয় এই কর্মীবাহিনী তারপরও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে ন্যুনতম সময়ের মধ্যেই এই জটিল-কঠিন কাজটি সম্পন্ন করেছে।

জাগরণ/জ্বালানি/কেএপি