• ঢাকা
  • শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: মে ২৭, ২০১৯, ০৭:৫৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : মে ২৭, ২০১৯, ০৭:৫৫ পিএম

বিশিষ্টজনের অভিমত

মুক্তিযোদ্ধাদের চেয়ে রাজাকারদের তালিকা জরুরি

মুক্তিযোদ্ধাদের চেয়ে রাজাকারদের তালিকা জরুরি
রামেন্দু মজুমদার ও গোলাম কুদ্দুছ (ডানে)

রাজাকারদের একটা তালিকা থাকলে ভালো হয়- রামেন্দু মজুমদার 
সত্যিকারের অপরাধীদের যেন তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয় : গোলাম কুদ্দুছ

মু্ক্তিযোদ্ধাদের চেয়েও রাজাকারদের তালিকা তৈরি করা জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন দেশে বিশিষ্ট নাগরিকরা। তারা বলেছেন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যে সব বাঙালি খুন, ধর্ষণ, নির্যাতন, লুণ্ঠনে পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতা করেছিল তাদের তালিকা করা জরুরি। তবে স্বাধীনতার ৫০ বছর এ ধরনের একটি তালিক তৈরি করা নিঃসন্দেহে একটি কঠিক কাজ। তবুও এটা করা জরুরি। কেননা এখন করা না হলে ভবিষতে আর কোনোদিন হয়তো এই তালিকা করা যাবে না। তবে এই তালিকা করার সময় যাতে এটাকে কেউ আবার অপ-ব্যবহার না করে এ ব্যাপারে সর্তক থাকতে হবে।

সোমবার (২৭ মে) দৈনিক জাগরণকে পৃথক প্রতিক্রিয়ায় তারা এক মন্তব্য করেন। এ ব্যাপারে ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের ( আইটিআই) সাম্মানিক সভাপতি, বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘এটি একটি ভালো উদ্যোগ। মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা তৈরি চেয়ে রাজাকারদের তালিকা তৈরি জরুরি। কেননা এখন তালিকা তৈরি করার না হলে ভবিষতে আর হয়তো করা যাবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাজাকারদের সবার বিচার হয়তো করা যাবে না। তবুও একটা তালিকা থাকলে ভালো হয়।’ 

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যাদের ক্ষমা করে দিয়েছেন তারা ছাড়া যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে তাদের তালিকা করা প্রয়োজন। এর মাধ্যমে ভবিষৎ প্রজন্ম জানতে পারবে কারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিল। তবে খেয়াল রাখতে হবে এটাকে যাতে কেউ আবার অপ-ব্যবহার না করে। কেননা স্বাধীনতার প্রায় ৫০ বছর পর এই ধরনের একটি তালিকা তৈরি সহজ কাজ নয়।

তিনি বলেন, সত্যিকারের যারা অপরাধী তাদের যেন তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করা হয়। কোনও ফাঁক-ফোকরের মাধ্যমে তারা যেন তালিকার বাইরে না থাকে সে দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। একইভাবে যারা সামান্য অপরাধ করেছে যাদের বঙ্গবন্ধু ক্ষমা করে দিয়েছেন, কোনও মহলের মাধ্যমে তাদের যেন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা না হয়।

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় খুন, ধর্ষণ, নির্যাতন, লুণ্ঠনে যে সব বাঙালি পাকিস্তানি বাহিনীকে সহযোগিতা করেছিল, তাদের তালিকা সংগ্রহ করে তা রক্ষণাবেক্ষণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিতে যাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়। চিঠিতে থানা ও জেলা পর্যায়ে রাজাকার, আল বদর, আল-শামস সদস্যদের তালিকা সংরক্ষণে কথা বলা হয়েছে।

রোববার (২৬ মে) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানায়। এর আগের বৈঠকে সংসদীয় কমিটি এ বিষয়ে সুপারিশ করেছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার মন্ত্রণালয় এই তথ্য জানিয়েছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কয়েকটি রাজনৈতিক দল পাকিস্তানি বাহিনীর পক্ষ নিয়েছিল। এরমধ্যে রয়েছে জামায়াতে ইসলামী, মুসলিম লীগ ও নেজামে ইসলামী। তখন যুদ্ধরত পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে সহযোগিতা রাজাকার বাহিনী গঠিত হয়েছিল। আনসার বাহিনীকে এই বাহিনীতে একীভূত করা হয়েছিল। প্রথমে এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে গঠিত শান্তি কমিটির অধীনে থাকলেও পরে একে আধা-সামরিক বাহিনীর স্বীকৃতি দিয়েছিল পাকিস্তান সরকার। একই রকম আধা-সামরিক বাহিনী ছিল আল বদর বাহিনী ও আল শামস বাহিনী। তবে স্বাধীনতাবিরোধী এই বাহিনীগুলোকে সাধারণ অর্থে রাজাকার বাহিনী হিসেবেই পরিচিত বাংলাদেশে। প্রায় এক দশক আগে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার শুরুর পর রাজাকারের তালিকা তৈরির দাবি উঠলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।

জেডএইচ/এসএমএম