• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২২, ১২:৪২ এএম
সর্বশেষ আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২২, ০৭:০৩ এএম

ন্যাটো : বিশ্বশান্তির সুচিন্তিত ক্যানসার!

ন্যাটো : বিশ্বশান্তির সুচিন্তিত ক্যানসার!
জাগরণ গ্রাফিক্স ডেস্ক।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ব দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। পুঁজিবাদী ব্লক ও সমাজতান্ত্রিক ব্লক। পুঁজিবাদী ব্লকের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র আর সমাজতান্ত্রিক ব্লকের নেতৃত্বে সোভিয়েত ইউনিয়ন আসীন হয়। সমাজতান্ত্রিক থাবা থেকে পশ্চিম ইউরোপকে রক্ষা করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ১৯৪৯ সালে গঠিত হয় ন্যাটো (North Atlantic Treaty Organization) নামে এক সামরিক জোট। ন্যাটোভুক্ত কোনো সদস্যদেশ অন্য কোনো দেশ দ্বারা আক্রান্ত হলে ন্যাটোভুক্ত সকল দেশ আক্রান্ত হয়েছে বলে গণ্য হবে এবং সকলে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ করবে। সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রভাব ও সমাজতন্ত্র ঠেকানোই এর মূল লক্ষ্য। ন্যাটো গঠনের প্রতিক্রিয়াস্বরূপ ১৯৫৫ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে ইউরোপের সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোকে নিয়ে গঠিত হয় ওয়ারশো প্যাক্ট (Warshaw Pact)। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয় ভেঙে যায়, সমাজতন্ত্র ও ওয়ারশো প্যাক্ট বিদায় নিয়েছে, শীতল যুদ্ধের অবসান হয়েছে। তাহলে এখন ন্যাটোর কী দরকার? ন্যাটো একটি যুদ্ধবাজ সংগঠন। একে ভেঙে দেওয়া উচিত। জাতিসংঘ গঠনের পর ন্যাটো গঠনের কোনো দরকারই ছিল না। এর উদ্দেশ্য খুব সৎ ছিল না। জাতিসংঘের সমর্থন না পেলে ন্যাটো জোট নিয়ে যাতে বৈরি দেশের ওপর হামলা করা যায় বা চাপ সৃষ্টি করা যায়, সেটাই ছিল লক্ষ্য। যেমন ইরাক আক্রমণ, আফগানিস্তান আক্রমণ হয়েছে জাতিসংঘের সমর্থন ছাড়া ন্যাটো দ্বারা। 

ন্যাটো প্রতিষ্ঠাকালে এর সদস্য ছিল ১১, এখন হয়েছে ৩০।  এর সদস্য সংখ্যা আরো বাড়াতে চায়। সাবেক সোভিয়েত সদস্যকে এর মধ্যে ঢুকাতে চায়। উদ্দেশ্য যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়াকে ভবিষ্যতে উঠে দাঁড়াতে দেবে না। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের আপত্তি এখানে। ইউক্রেন ১৯৯১ সন পর্যন্ত ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি প্রদেশ বা অঙ্গরাজ্য ছিল। যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে ন্যাটোর সদস্য করবে, রাশিয়া করতে দিবে না। রাশিয়া যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ইউক্রেনকে ন্যাটোভুক্ত না করার প্রতিশ্রুতি চায়। সে প্রতিশ্রুতি না পেলে রাশিয়া ইউক্রেনকে দখল করে নিতে পারে। ইউক্রেনের মধ্যে রুশ জাতিও আছে। ভাষা, সংস্কৃতি ও জাতিগতভাবে ইউক্রেনিদের সঙ্গে রুশদের মিল রয়েছে। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়ার তাতাররা ইউক্রেন থেকে বেরিয়ে রাশিয়ার সাথে মিশে গেছে। পশ্চিমারা বলে, রাশিয়া ক্রিমিয়া দখল করেছে। ক্রিমিয়া রাশিয়ার অংশই ছিল। ১৯৫৪ সালে তৎকালীন সোভিয়েত সরকার প্রশাসনিক সুবিধার্থে ক্রিমিয়াকে ইউক্রেনের অন্তর্ভুক্ত করে। ইউক্রেনের আরো কয়েকটা অঞ্চল ইউক্রেন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রাশিয়ার সঙ্গে মিশে যেতে চায়। যেমন দনবাস, দনেৎস্ক। এমতাবস্থায়, ইউক্রেনের উচিত কোনো পক্ষে না গিয়ে, সকলের সঙ্গে সদ্ভাব রেখে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাওয়া। কেননা ইউক্রেন অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল। 

মনরো ডকট্রিন ও আজকের বাস্তবতা:
নেপোলিয়নের পতনের পর ১৮১৪-১৮১৫ সালে যে ভিয়েনা কনভেনশন হয় তাতে ন্যায্য অধিকার নীতি নামে এক নীতি গৃহীত হয়। এ নীতি হলো ফরাসি বিপ্লবের পূর্বে যে দেশ যে রাজবংশের শাসনাধীনে ছিল, সেই দেশ সেই রাজবংশের অধীনে শাসিত হবে। কেননা ফরাসি বিপ্লব ও নেপোলিয়নের বিভিন্ন দেশ দখলের ফলে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের মানচিত্র পরিবর্তন ও রাজবংশ উচ্ছেদ হয়। ভিয়েনা কনভেনশনের ন্যায্য অধিকার নীতির কারণে রাজ্য হারানো রাজারা রাজ্য ফিরে পান। ভিয়েনা কনভেনশনে আরো সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় যে, কোনো রাজ্যে প্রজার বিদ্রোহ সহ্য করা হবে না। এদিকে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশে স্পেনের অনেক উপনিবেশ ছিল। নেপোলিয়ন স্পেন দখল করলে ব্রিটেনের ইন্ধনে দক্ষিণ আমেরিকার উপনিবেশগুলো বিদ্রোহ করে স্বাধীন হয়ে যায়। পর্তুগালের উপনিবেশও স্বাধীনতা ঘোষণা করে। ভিয়েনা কনভেনশনের মধ্যমণি ছিলেন অস্ট্রিয়ার প্রধানমন্ত্রী প্রিন্স মেটারনিক। নেপোলিয়নের পর তিনি হন ইউরোপের ভাগ্যবিধাতা। তিনি ছিলেন বিপ্লব ও বিদ্রোহের ঘোরতর বিরোধী। তিনি ফরাসি বিপ্লবকে গ্যাংগিরিনের সাথে তুলনা করতেন এবং উত্তপ্ত লৌহদণ্ড দ্বারা পুড়িয়ে ফেলার কথা বলতেন। তা না হলে তা সমগ্র দেহে ছড়িয়ে পড়বে। যাহোক, স্পেন মেটারনিকের কাছে দক্ষিণ আমেরিকার বিদ্রোহ দমনের লক্ষ্যে সেনা চায়। তিনি তাতে সাড়া দেন। এ প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ আমেরিকায় ইউরোপের সেনা প্রেরণের ঘোর বিরোধিতা করে। ১৮২৩ সালে ২ ডিসেম্বর মার্কিন কংগ্রেসে প্রেসিডেন্ট জেমস মনরো ঘোষণা করেন তাঁর বিখ্যাত মনরো ডকট্রিন। যার মূল কথা ছিল সমগ্র আমেরিকার (উত্তর ও দক্ষিণ উভয় আমেরিকায়) যে কোনো বিষয়ে ইউরোপের কোনো দেশের যেকোনো ধরনের হস্তক্ষেপ বা কলোনি স্থাপন প্রক্রিয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিকট অবৈধ হস্তক্ষেপ বলে বিবেচিত হবে এবং এ ধরনের হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে দেশটি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।  এক সময় ইউরোপ দক্ষিণ আমেরিকায় অবস্থিত তার কলোনিগুলোতে হস্তক্ষেপ করতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্র তার বিরোধিতা করে, মনরো ডকট্রিন ঘোষণা করে। এখন সেই যুক্তরাষ্ট্র যদি ইউরোপের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করে, তাহলে তা কি মনরো নীতির ব্যতয় নয়?

রাশিয়া বরাবরই একটি বিশাল দেশ। কিন্তু তার উষ্ণ জলরাশির অভাব। ইউরোপের শক্তিগুলো বরাবরই রাশিয়াকে কোনঠাসা করে রাখতে চেয়েছে। অনেক সময় তা করতে গিয়ে নিজেরাই ধ্বংস হয়ে গেছে। যেমন ফরাসি সম্রাট নেপোলিয়ন বোনাপার্ট, জার্মানির চ্যান্সেলর ও প্রেসিডেন্ট এডলফ হিটলার- তারা দুইজনই ছিলেন পরাক্রমশালী, বিশ্বশক্তির অধিকারী। কিন্তু তারা দুইজনই রাশিয়া আক্রমণ করতে গিয়ে ধরাশায়ী হন এবং নিজেদের পতন ডেকে আনেন।

নেপোলিয়ন ছিলেন একজন ফরাসি সৈনিক। ১৭৮৯ সালের ফরাসি বিপ্লবের পর রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাব পরিলক্ষিত হয়। সুযোগ বুঝে নেপোলিয়ন ক্ষমতা দখল করে নেন। ক্ষমতা দখল করে তিনি ফরাসি বিপ্লবের ঢেউ সারা ইউরোপে ছড়িয়ে দেন। ইউরোপের একের পর এক দেশ দখল করতে থাকেন। রাজতন্ত্র ভেঙে প্রজাতন্ত্র স্থাপন করে দেন। ১৮০৭ সালে টিলসিটের সন্ধির মাধ্যমে রাশিয়ার জার প্রথম আলেকজান্ডারকে বশীভূত করে ফেলেন। নেপোলিয়নের শুধু জয় জয়কর অবস্থা। বাকি থাকল শুধু ব্রিটেন। ব্রিটেন ছিল নৌশক্তিতে বলিয়ান। নেপোলিয়ন ব্রিটিশদেরকে অভিহিত করতেন দোকানদারের জাতি হিসেবে। শিল্প বিপ্লবের ফলে ব্রিটিশরা তাদের উৎপাদিত পণ্য ইউরোপব্যাপী বিক্রি করত। নেপোলিয়ন ব্রিটিশদের হাতে না পেরে ভাতে মারতে চাইলেন। তিনি ব্রিটিশের পণ্য বিক্রির বিরুদ্ধে অবরোধ প্রথা প্রবর্তন করলেন। ইতিহাসে তা মহাদেশীয় ব্যবস্থা নামে অভিহিত। এ ব্যবস্থা মনে-প্রাণে কেউ মানতে চাইত না, কিন্তু নেপোলিয়নের ভয়ে কেউ প্রত্যাখ্যানও করতে পারত না। 

রাশিয়ার জার প্রথম আলেকজান্ডার মহাদেশীয় ব্যবস্থা অমান্য করে বিলেতি দ্রব্য ক্রয় করে। আলেকজান্ডারকে শিক্ষা দিতে নেপোলিয়ন ছয় লক্ষ সেনা নিয়ে রাশিয়া আক্রমণ করতে যান। নেপোলিয়ন বিভিন্ন দেশ দখল করে প্রতিষ্ঠা করেন গ্রাণ্ড আর্মি। গ্রাণ্ড আর্মিতে ছিল বিশ দেশের সেনাবাহিনী। নেপোলিয়ন গ্রাণ্ড আর্মি নিয়ে মস্কো অভিমুখে ছুটছেন তো ছুটছেন। কেউ বাধা দিচ্ছেন না। রুশ সেনারা পিছু হটছেন, কৃষকরা তাদের খাদ্য পুড়িয়ে দিয়ে পালাচ্ছেন। রাশিয়ার এ নীতিকে বলা হয় 'পোড়া মাটির নীতি'। নেপোলিয়ন মস্কো দখল করে কাউকে পাচ্ছেন না। তিনি রুশ জারকে আহবান জানাচ্ছেন সন্ধি করতে। কিন্তু কেউ সাড়া দিচ্ছেন না। এদিকে নেপোলিয়নের বিশাল সেনাবাহিনীতে খাদ্যাভাব দেখা দেয়। শুরু হয় বৈরি আবহাওয়া, তুষার ঝড়। খাদ্যাভাব ও তুষার ঝড়ে সৈন্য ও ঘোড়া নিহত হতে থাকে, অস্ত্র, গোলাবারুদ অকেজো হয়ে যায়। তখন নেপোলিয়ন টিকতে না পেরে মস্কো ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন। যখনই নেপোলিয়নের বাহিনী ব্যাক করতে লাগল, তখনই শুরু হলো রুশ বাহিনীর গেরিলা আক্রমণ। বৈরি আবহাওয়া ও রুশ বাহিনীর আক্রমণে নেপোলিয়নের অধিকাংশ সেনা নিহত হয়। তিনি কোনোমতে পঞ্চাশ হাজার সেনা নিয়ে ফ্রান্সে ফিরতে সক্ষম হন। মস্কো থেকে নেপোলিয়নের পালিয়ে আসার কারণে ইউরোপে রব ওঠে যে, নেপোলিয়নকেও পরাজিত করা সম্ভব। নেপোলিয়ন জীবনে ৪০টি যুদ্ধে জয়লাভ করেন। অনেক যুদ্ধে নেপোলিয়নকে যুদ্ধই করতে হয়নি। যুদ্ধক্ষেত্রে তাঁর নাম শুনলেই বিপক্ষ দল পালিয়ে যেত বা আত্মসমর্পণ করত। কিন্তু তাঁর রুশ অভিযান ব্যর্থ হওয়ায় ইউরোপীয় শক্তিগুলো (বিশেষ করে রাশিয়া, ব্রিটেন, অস্ট্রিয়া ও প্রুশিয়া) একত্রিত হয় এবং ১৮১৩ সালে লিপজিগের যুদ্ধে ও ১৮১৫ সালের ওয়াটারলু যুদ্ধে নেপোলিয়ন চূড়ান্তভাবে পরাজিত হন। 

১৯৩৩ সালে হিটলার জার্মানির চ্যান্সেলর ও ১৮৩৪ সালে প্রেসিডেন্ট হন। একই ব্যক্তি দুই পদের অধিকারী, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি। হিটলার ১৯৩৯ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে অনাক্রমণ  চুক্তি (Non Aggression Pact) করেন। হিটলারের ধারণা ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হবে, তবে তা হবে ১৯৪৫ সালের পর। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হয়ে যায় ১৯৩৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসেই। যুদ্ধ ১৯৪২ সন পর্যন্ত হিটলারের অনুকূলে ছিল। প্রায় সমগ্র ইউরোপ দখল করে ফেলে। জয়ের নেশা তাকে পেয়ে বসে। তার সখ হলো সোভিয়েত ইউনিয়ন দখল করার। তাই নিজের করা অনাক্রমণ চুক্তি ভঙ্গ করে জার্মানি ৪ মিলিয়ন সৈন্য, ৭০০০ কামান, ৩০০০ ট্যাংক ও ২৫০০ যুদ্ধ বিমান নিয়ে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমান রাশিয়া) আক্রমণ করে। আক্রমণের প্রথম দিনেই জার্মানি রাশিয়ার ১০০০ বিমান ধ্বংস করে দেয়। রুশ লাল ফৌজ পূর্বের ন্যায় পোড়া মাটির নীতি অনুসরণ করে পিছু হটে, যেটা করেছিল নেপোলিয়নের সময়। শুরু হয় বৈরি আবহাওয়া, প্রাকৃতিক বিপর্যয়। তুষার ঝড়ে জার্মানির সৈন্যের অধিকাংশ, ট্যাংক, বিমান বরফে ঢাকা পড়ে এবং ৮০ হাজার সৈন্য রুশদের হাতে বন্দি হয়। রুশ লাল ফৌজ জার্মান দখল থেকে পূর্ব ইউরোপের একের পর এক দেশকে মুক্ত করতে থাকে। শেষে লাল ফৌজ জার্মানিতে পৌঁছে যায় এবং রাজধানী বার্লিন দখল করে। ১৯৪৫ সালের ৭ মে জার্মানি লাল ফৌজের কাছে আত্মসমর্পন করে। হিটলার আত্মহত্যা করেন। সোভিয়েত বাহিনী পূর্ব ইউরোপের যেসব দেশকে জার্মান থেকে দখল মুক্ত করে, সেসব দেশে  সমাজতন্ত্র কায়েম করতে থাকে। সোভিয়েত ইউনিয়নের অধীনে বার্লিন তথা পূর্ব জার্মানি এবং যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের অধীনে পশ্চিম জার্মানি ন্যস্ত হয়। ১৯৪২ সাল পর্যন্ত মিত্রশক্তি হিটলারের সাথে সন্ধি করে যুদ্ধ থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিল। হিটলার তখন সন্ধির বিপক্ষে ছিল। তিনি ভেবেছিলেন রাশিয়া জয় করতে পারলেই তার বিশ্ব জয় ঘোষণা করতে বাকি থাকবে না। আর রাশিয়া আক্রমণ করতে গিয়ে নেপোলিয়নের ন্যায় তিনিও ধরাশায়ী হলেন।

বাপ-দাদা সম্পত্তি গড়ে, নাতি এসে তা খুয়ে ফেলে। গর্বাচেভ হয়েছেন তাই। লেলিন, স্ট্যালিন সোভিয়েত ইউনিয়ন গড়েছেন, গর্বাচেভ এসে তা ধ্বংস করে দিয়েছেন। তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট হয়ে সমাজতন্ত্র ত্যাগ করলেন, সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে ১৫টি প্রজাতন্ত্রে বিভক্ত করে দিলেন। মানুষ যুদ্ধ করে স্বাধীনতা পায় না। তিনি বিনা যুদ্ধে তা দিয়ে দিলেন। তিনি ছিলেন সিআই এর দালাল। তার কারণে পৃথিবীর ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট হয়। যুক্তরাষ্ট্র একক সুপার পাওয়ার হওয়ার সুযোগ পায়। বিনিময়ে দালালির পুরস্কারস্বরূপ তিনি নোবেল লরেট হন। তিনি চীনকে ফলো করলে সমাজতন্ত্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন দুই-ই টিকে যেত। গর্বাচেভ যা স্বেচ্ছায় ছেড়ে দিয়েছেন, পুতিন তা ফিরে পেতে যুদ্ধের মহড়া দিচ্ছেন। 

 

লেখক•সহযোগী অধ্যাপক, ইতিহাস বিভাগ, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ, ফরিদপুর।