জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী মুজিব বর্ষ পালনে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে জাতির পিতার দুর্লভ ছবি ও চিঠি সংগ্রহে তৃণমূলকে নির্দেশ দেবে দলটি। শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে দলের এক সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক শেষে দলটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ এক সংবাদ সম্মেলনে এমন তথ্য জানিয়েছেন।
রাজধানীর ধানমণ্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হানিফ বলেন, গতকাল (শুক্রবার) আওয়ামী লীগের যৌথসভা ছিল। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর মধ্যে একটি ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপন। সেই মুজিব বর্ষ যথাযথভাবে উদযাপনের জন্য সারাদেশে কর্মসূচি করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে আমাদের সাংগঠনিক বিষয়ে গতকাল সিদ্ধান্ত ছিল এজন্য আজ আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা হয়েছে। সভায় জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপনের জন্য গঠিত জাতীয় কমিটিকে কয়েকটি দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, কয়েকটি কর্মপদ্ধতি ঠিক করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে হানিফ জানান, আটটি বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদকরা প্রত্যেকে নিজ নিজ বিভাগের জেলার সভাপতি সাধারণ সম্পাদককে নির্দেশনা দেবেন। প্রত্যেকটি জেলায় মুজিব বর্ষ পালনের জন্য কমিটি করা হবে। দ্বিতীয়টি হলো- জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ‘৪৭-এর পরে বাংলাদেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সারা দেশের মানুষকে তাদের অধিকার সচেতন করার জন্য বাংলাদেশের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ঘুরে বেরিয়েছেন। আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন, বিভিন্ন সভা-সেমিনার করেছেন। এ ছাড়াও তার কর্মকাণ্ড পরিচালনার সময় বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন, থেকেছেন। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে তার যে নিবিড় সম্পর্ক ছিল এই সমস্ত ঘটনাবলি বা স্মৃতিবিজড়িত তথ্য-উপাত্ত যদি আমরা সংগ্রহ করতে পারি সেজন্য আমাদের সাংগঠনিক সম্পাদকরা জেলার সভাপতি সাধারণ সম্পাদককে নির্দেশনা দেবেন। স্ব স্ব জেলায় যদি এরকম কোনো ঘটনা থাকে সেই তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হবে। কোনো ব্যক্তি যদি থাকেন- বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ যার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু কথা বলেছেন, চলার পথে দেখা হয়েছে সেই তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে কেন্দ্রে পাঠানোর জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, আরেকটি বিষয় ছিল- আমাদের জাতির পিতার রাজনৈতিক জীবনে চলার পথে যদি কোনো ছবি থাকে, দুর্লভ ছবি থাকে যা এখনও আমাদের কাছে আসেনি বা জাতীয় পর্যায়ে প্রকাশ হয়নি এমন যদি কোনো ছবি থাকে সেগুলো পাঠানোর জন্য এবং সংগ্রহ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আরেকটি বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে- বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অত্যন্ত কর্মীবান্ধব ও সাধারণ জনগণের নেতা ছিলেন, তার জীবন থেকে আমরা দেখেছি যখন জেলখানায় থাকতেন সেই সময় প্রায়ই সাধারণ কর্মীদের কাছে তিনি চিঠি লিখতেন। বঙ্গবন্ধুর ডায়েরি থেকে এই ধরনের অনেক তথ্য-উপাত্ত পাওয়া গেছে। যদি সেই সময়ের বঙ্গবন্ধুর লেখা কোনো চিঠি যদি কারো কাছে থাকে সেই দুর্লভ চিঠিগুলো সংরক্ষণ করার জন্য আমাদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর যে সাব কমিটি আছে সেই কমিটিতে যারা আছেন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে, বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবাষির্কী পালনের জন্য তারা বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা ঠিক করবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড. আফজাল হোসেন, উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।
এএইচএস/ এফসি