
বিরোধীদলীয় নেতা হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য রংপুর-৩ আসন জাতীয় পার্টি চাইলে আওয়ামী লীগ বিবেচনা করতে পারে বলে জানিয়েছেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) বনানীর সেতু ভবনে পদ্মা সেতুর রক্ষণাবেক্ষণে কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশনের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, রংপুরের আসনটি আসলে জোটের নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় পার্টির ছিল, এরশাদ সাহেবের আসন মনোনীত। জোটগত সিট বণ্টনে এটা জাতীয় পার্টির ছিল। এখন জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধী দলের আসনে। এখন তারা স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে এলে আসতে পারে, সেটা তাদের ব্যাপার।
রংপুর-৩ আসন আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেবে কি না- জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, তারা যদি জোটগতভাবে আমাদের কাছে আসনটি চান যে, সেটা আমাদের দেয়া হোক, তখন আমরা বিবেচনা করব। এই মুহূর্তে আমাদের প্রার্থী আছে। যতক্ষণ না পর্যন্ত আলোচনা না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না। আলাপ-আলোচনা করে আমরা যদি মনে করি ...। এই মুহূর্তে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। তারাও কোনো আবেদন করেননি। তাই এই ব্যাপারে কিছু বলা যাচ্ছে না।
ছাত্রলীগের সংকট নিরসন কীভাবে হচ্ছে- জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি এ নিয়ে আর কোনো কথা বলব না। কারণ প্রধানমন্ত্রী, আমাদের সভাপতি দেশরত্ন শেখ হাসিনা বিষয়টি দেখছেন। এ নিয়ে আর কোনো মন্তব্য নেই। তিনি বলেন, আমি একটা বিষয় বুঝি না, একটা ছাত্র সংগঠন নিয়ে এত লেখালেখি কি দেশের অন্যান্য বিষয়ের চেয়ে বেশি প্রাধান্য পায়?
মহাসড়কের চাঁদাবাজির পাশাপাশি টোল আদায় বাড়তি ভোগান্তির কারণ হবে কি না জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আগে যেতেন ৪ ঘণ্টায় এখন যাচ্ছেন তিন ঘণ্টায়, সময় বাঁচবে এখানে লসের কোনো কারণ নেই। আর সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হলো, এটা চুক্তি পর্যান্ত গড়াতে অনেক সময় লাগবে। এখনও টোলের বিষয়টি নির্ধারণই হয়নি। কাজেই এটা ডাবল কি ট্রিপল হবে- কী করে এটা অনুমান করে লিখবো। টোল নির্ধারণের প্রথমিক কোনো আলাপ-আলোচনা পর্যন্ত হয়নি। কাজেই এ নিয়ে আগাম মন্তব্যের কোনো কারণ নেই। এর কোনো বাস্তবতা নেই, কোনো কারণ নেই।
টোল নিয়ে বিএনপির অভিযোগের জেবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, মহাসড়ক করার কোনো অভিজ্ঞতা তো বিএনপির নেই। যখন ক্ষমতায় ছিল তখন চার লেনের কোনো রাস্তাই ছিল না। পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল- এসব তারা স্বপ্নেও দেখেনি। এদেশে সড়ক অবক্ঠামোর যে উন্নয়ন হয়েছে, এসবের বিষয়ে তাদের কোনো অভিজ্ঞতা নেই। অন্যান্য দেশে যে টোল আদায় হয় এটা তারা জেনেও না জানার ভান ধরছে। রাস্তা করতে হলে তো রাস্তা ব্যবহার উপযোগী রাখতে হয়, রাস্তার তো মেন্টেইনেন্স আছে।
বিএনপির আন্দোলনের হুমকিকে কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ আন্দোলনে ভয় পায় না। আওয়ামী লীগে আন্দোলনকে মোকাবিলা করেই ক্ষমতায় এসেছে। আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে করলে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আন্দোলনের নামে সহিংসতা-বিশৃঙ্খলা করলে সমুচিত জবাব দেয়া হবে।
আসামের বিষয়ে সরকারের কোনো উদ্বেগ আছে কি না জানতে চাইলে সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, আমরা ভারত সরকারে কাছে যখন তাদের মন্তব্য জানতে চাই- তারা আসলে কী করতে চায়। তখন ভারত সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকায় বলে গেছেন, ওখান থেকে আমরা যেটা পেলাম, এ নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। তবে আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। বিচ্ছিন্নভাবে ভারতের কে কী বক্তব্য দিল সেটা আমাদের কাছে বিবেচ্য নয়। ভারত সরকার আমাদের কী বলেছে সেটাই বিবেচ্য বিষয়। বিষয়টা এখনও অপিলের পর্যায়ে আছে। আরও চার মাসের মতো সময় লাগবে আপিলের পর এটা নিয়ে যাচাই-বাছাই পর্যায় রয়েছে। এটা নিয়ে শেষ কথা বলার মতো সময় এখনও আসেনি।
এএইচএস/ এফসি