• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল, ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৪, ২০১৯, ০৬:৪০ পিএম

একদিনেই পাল্টে গেল ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য

একদিনেই পাল্টে গেল ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য
ওবায়দুল কাদের - ফাইল ছবি

 

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য পাল্টে গেল একদিনেই। নির্বাচনের আগে গণভবনে যারা সংলাপে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের আবারও সংলাপে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন- গতকাল রোববার দেয়া এ বক্তব্য পরিবর্তন করে আজ তিনি বললেন, নির্বাচন নিয়ে সংলাপের কোনো বিষয় নেই।


ওবায়দুল কাদের আজ সোমবার বলেন, যেই নির্বাচন নিয়ে সারা বিশ্বের কোথাও কোনো সংশয় নেই, গণতান্ত্রিক বিশ্ব থেকে উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছে, কোনো বিতর্ক কোনো প্রশ্ন না করেই। সেখানে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সংলাপের কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচন নিয়ে কোনো সংলাপ নয়।


সেক্ষেত্রে গণভবনে দলগুলোকে ডাকা হবে কেন- জানতে চাইলে কাদের বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে ঐক্যফ্রন্টসহ ৭৫টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ হয়েছে। নির্বাচন-পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য চিঠি দিয়ে আবারো তাদেরকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। আর সেটা শুভেচ্ছা বিনিময়ের জন্য। এখানে কোনো সংলাপ নয়। কোনো সংলাপের আমন্ত্রণ আমরা জানাচ্ছি না।


রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের এক প্রস্তুতি সভায় তিনি এমন মন্তব্য করেন। আগামী ১৯ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আওয়ামী লীগের মহাসমাবেশ উপলক্ষে এ প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়। 


রোববার (১৩ জানুয়ারি) দলের এক যৌথসভায় ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দেশের সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। ঐক্যফ্রন্ট, যুক্তফ্রন্টসহ ৭৫টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে গণভবনে সংলাপ হয়েছিল। তিনি বলেন, এখন নির্বাচন শেষ হয়েছে, আমাদের নেত্রী গতকাল আমাদের সঙ্গে ওয়ার্কিং কমিটির উপদেষ্টা পরিষদের যৌথ বৈঠকে বলেছেন যে, যাদের সঙ্গে সংলাপ হয়েছে, তাদের আমন্ত্রণ করবেন। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে নেত্রী কিছু মতবিনিময় করবেন এবং নেতাদের আপ্যায়নের ব্যবস্থা থাকবে। এ ব্যাপারে আমরাও সবাই একমত যে, যারা সংলাপ এসেছিলেন তাদের আবারও নেত্রী সংলাপে আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন। একসঙ্গে সবাইকে দাওয়াত দেয়া হবে। সেটা খুব শিগগিরই জানিয়ে দেয়া হবে।


আজ সোমবার প্রস্তুতি সভায় সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠার জন্য আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীকে নির্দেশনা দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের নিজেদের ভেতরে সাংগঠনিক দুর্বলতা আছে। এই মহানগরে আছে, সারা দেশে ভেতরে দুর্বলতা আছে। সব চেয়ে বড় কাজ হচ্ছে দলকে সংগঠিত করা। বিজয়কে সংহত করতে হলে, ঘর গোছাতে হবে, ঘর গোছাতে হবে।


তিনি আরও বলেন, দলকে সুসংগঠিত করার প্রক্রিয়া হাতে নিন। ভেতরের দুর্বলতা কটিয়ে উঠতে হবে। শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে পারি না। এত বড় বিজয়, আর আমাদের দুর্বলতা-  নেই এটা বলতে পারি না। কারণ আমাদের ভেতরে কিছু দুর্বলতা আছে।


ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন বেশি দূরে নয়- জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের সাংগঠনিক দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে হবে। সামনে উপজেলা নির্বাচন। আর উত্তর সিটি নির্বাচন বেশি দূরে নয়। হাইকোর্টের আইনজীবীদের মারফত জানতে পেরেছি, উত্তর সিটি নির্বাচন বেশি দূরে নয়।

 
ওবায়দুল কাদের বলেন, এই যে আমাদের বিশাল বিজয়, এই বিজয়ের পর এখন সরকার দল চালাবে? না দল সরকার চালাবে? আমি বলতে চাই- দলই সরকার চালাবে।


বর্ধিত সভায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, আগামী ১৯ জানুয়ারি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সমাবেশ আমাদের বিজয় সমাবেশ। এই বিজয় সমাবেশের মাধ্যমে আমরা বিজয়কে উদযাপন করবো। এই বিজয় সমাবেশে জনতার ঢল নামবে। আগের সমাবেশগুলোর চেয়ে এবারের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে নেতাকর্মীদের প্রবেশের গেট আরও বাড়ানো হবে। মহিলাদের জন্য আলাদা গেট থাকবে।


আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, এই বিজয়ের পর আমাদের দায়িত্বশীলতা আরও বেড়ে গেছে। আমরা দায়িত্বশীল আচরণ করলে আগামীতেও একই রকম সফলতা পাব। তিনি বলেন, ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে আমরা যেন স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে সমূলে উৎপাটন করতে পারি সেই লক্ষে কাজ করে যেতে হবে।


ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাতের সভাপতিত্বে বর্ধিত সভায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শিক্ষা উপ-মন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, দক্ষিণ সিটি মেয়র সাইদ খোকন।


এএইচএস/