
‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পুনর্জাগরণে শহীদ জননীর অবদান চির অম্লান হয়ে থাকবে’। গত ৩ মে শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি যুক্তরাজ্য শাখার এক আলোচনা সভায় এমন মন্তব্য করেন আলোচকরা।
যুক্তরাজ্য ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি ইসহাক কাজলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক জামাল খানের পরিচালনায় পূর্ব লন্ডনের এমিনেন্স অ্যাকান্ট্যান্টস সেন্টারে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা আনসার আহমেদ উল্লাহ, সহ সাধারণ সম্পাদক স্মৃতি আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক রুবি হক ও কোষাধ্যক্ষ এনামুল হক প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, জাহানারা ইমাম মুক্তিযুদ্ধকালে মুক্তিযোদ্ধা পুত্র রুমী ও স্বামীকে হারান। মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস কেটেছে তাঁর একদিকে উদ্বেগ এবং আরেকদিকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করার বৃত্তান্ত লিখেছিলেন তিনি চিরকুটে, ছিন্ন পাতায়, গোপন ভঙ্গি ও সংকেতে।
১৯৯১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি জামায়াতে ইসলামীর সমর্থন নিয়ে বিএনপি সরকার গঠন করে। ১৯৯১ সালের ২৯ ডিসেম্বর শীর্ষস্থানীয় যুদ্ধাপরাধী ও পাকিস্তানি নাগরিক গোলাম আযমকে দলের আমীর ঘোষণা করায় সারাদেশ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। গোলাম আযমকে জামায়াতে ইসলামীর আমীর বানানোর প্রতিবাদে ১৯৯২ সালের ১৯ জানুয়ারি শহীদ জননী জাহানারা ইমামের নেতৃত্বে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি গঠিত হয়।
দেশের সকল প্রগতিশীল জোটের সহযোগিতায় ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটি ১৯৯২ সালের ২৬ মার্চ “গণ-আদালত” প্রতিষ্ঠা করে স্বাধীনতা যুদ্ধের শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের বিচার করে।
সুশীল সমাজে উদ্ভূত আন্দোলন দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার উদাহরণ খুব কম। তবে শহীদ জননীর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম।
বক্তারা আরও বলেন, ২৭ বছর আগে শহীদ জননীর নেতৃত্বে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার এবং মৌলবাদী জামাত শিবিরের নিষিদ্ধ করণের দাবিতে যে আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল তার আংশিক বিজয় অর্জিত হয়েছে। তবে এখন সময় এসেছে পাকিস্তানি বাহিনীর বিচার করার, যারা ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যাযজ্ঞ ঘটিয়েছিল।
শহীদ জননীর অন্যতম লক্ষ্য ছিল মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা নির্মূল করা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন জঙ্গি মৌলবাদের বিরুদ্ধে সামগ্রিকভাবে রাজনৈতিক,সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও আদর্শিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
আরআই