১৯৭৫ সাল থেকে যাত্রা শুরু করা ওয়ানডে সংস্করণের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে প্রতিটি আসরেই শক্তিশালী ও সমীহ জাগানিয়া একটি দল হিসেবে অংশ নিয়ে আসছে নিউজিল্যান্ড। আগের ১১ আসরে তাদের সফলতার ধারাবাহিকতা চোখে পড়ার মতো।
এখন পর্যন্ত সর্বাধিক ৬ বার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলার রেকর্ড ব্ল্যাক ক্যাপসদের দখলে। ১৯৮৩ এবং ১৯৮৭ বিশ্বকাপেই শুধুমাত্র তারা গ্রুপ পর্বের বাধা পার হতে পারেনি। ১৯৯৬ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনাল এবং ২০০৩ বিশ্বকাপে সুপার সিক্সে খেলেছিল কিউইরা।
নিউজিল্যান্ড শেষ চারে উঠেছে ১৯৭৫, ১৯৭৯, ১৯৯২, ১৯৯৯, ২০০৭ এবং ২০১১ বিশ্বকাপে। গতবার ২০১৫ বিশ্বকাপে তো ইতিহাসের অদৃশ্য প্রাচীর টপকে তারা ফাইনালেই চলে গিয়েছিল। কিন্তু শিরোপা ট্রফি তাদের শেষ অবধি অধরাই থেকে যায়। অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে শেষ হয়ে যায় কিউইদের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পথ।
তবে অতীতের আসরগুলোর মতো দারুণভাবে এগিয়ে গিয়ে শেষের দিকে রণে ভঙ্গ দিয়ে বসা নিউজিল্যান্ডের এবারের বিশ্বকাপ জয়ের মিশনে এগিয়ে যাওয়ার পথ পরিক্রমা পর্যবেক্ষণ করে দেখা যাচ্ছে, নিউজিল্যান্ড অবিশ্বাস্য রকমের সৌভাগ্য বহন করে এগিয়ে যাচ্ছে এবং অপরাজিত থেকে বর্তমানে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে অবস্থান করছে।
সবার আগে নিউজিল্যান্ড যাদের বিপক্ষে তাদের সৌভাগ্যের মুখ দেখা শুরু করেছে সেই দলটি হলো বাংলাদেশ। আগে ব্যাট করা টাইগাররা ২৪৪ রানের বেশি তুলতে না পারলেও বল হাতে তারা জ্বলে উঠলে ম্যাচ জমতে শুরু করে। যদিও টাইগারদের শেষ রক্ষা হয়নি। মূলত ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে রস টেলরের সহজ রান আউট মুশফিকুর রহিম মিস করাতেই মূলত জয় হাতছাড়া করে বাংলাদেশ।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তো ভাগ্যদেবী নিউজিল্যান্ডের জন্য রীতিমতো সৌভাগ্যের মালা পরানোর জন্য নিজেই বসেছিলেন! ইমরান তাহিরের এক ওভারে কেন উইলিয়ামসনের ব্যাটে বল নিশ্চিত লাগলেও রিভিউ না নেয়া ও ডেভিড মিলারের জোড়া ক্যাচ মিস করা, সবমিলিয়ে প্রোটিয়াদের নিজেদের চোকার প্রমাণের দিনে মাত্র ৩ বল বাকি থাকতে কিউইদের ৪ উইকেটের জয় পাওয়াকে সৌভাগ্য ছাড়া আর কিছুই নয়।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২৯১ রান করার পর নিউজিল্যান্ডের সহজ জয় তো হাত থেকে বের করেই নিয়ে যাচ্ছিলেন কার্লোস ব্র্যাথওয়েট। ক্যারিবীয়দের জয়ের জন্য যখন দরকার ৭ বলে ৬ রান, তখনই ১০১ রানের ইনিংস খেলা ব্র্যাথওয়েট ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে লং অনে বাউন্ডারি লাইনের একদম কাছে ট্রেন্ট বোল্টের হাতে ধরা পড়াতেই আরেকটি সৌভাগ্যের জয় পায় কেন উইলিয়ামসনের দল। তাই বারবার ভাগ্য বিড়ম্বনায় পড়া নিউজিল্যান্ড এবার মাত্রাতিরিক্ত সৌভাগ্যকে সঙ্গী করে বিশ্বকাপ ট্রফি দেশে নিয়ে গেলেও যেতে পারে!
আরআইএস