• ঢাকা
  • সোমবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ৫, ২০১৯, ১১:৫৩ এএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ৫, ২০১৯, ১১:৫৩ এএম

নর্দম্পটনের স্মৃতি লর্ডসে ফিরিয়ে আনতে চায় বাংলাদেশ

নর্দম্পটনের স্মৃতি লর্ডসে ফিরিয়ে আনতে চায় বাংলাদেশ
১৯৯৯ বিশকাপে পাকিস্তানকে হারিয়ে দেয়ার পর বাংলাদেশের সমর্থকরা মাঠে নেমে পড়েন। ফাইল ফটো

১৯৯৯ বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ খেলতে যাওয়াটাই বাংলাদেশের জন্য অনেক বড় এক ঘটনা ছিল। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে কষ্টার্জিত জয় নিয়েই গ্রুপ পর্বে বড় দলগুলোর বিপক্ষে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য খেলে যাচ্ছিল লাল-সবুজের দল। তবে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে টাইগাররা যে পাকিস্তানের বিপক্ষে জিতে নতুন এক ইতিহাস জন্মের জন্য মাঠে নেমেছে তা কেই বা তখন ভাবতে পেরেছিল?

ব্যাটিং লাইনআপে সাঈদ আনোয়ার, ইজাজ আহমেদ, ইনজামাম উল হক, সেলিম মালিক, মঈন খানদের মতো ব্যাটসম্যানরা তখন বিশ্বের সকল বোলারদের জন্যই চিন্তার কারণ ছিল।বোলিং লাইনআপে ছিল ওয়াসিম আকরাম, ওয়াকার ইউনুস, শোয়েব আকতার, আজহার মাহমুদের মতো পেসাররা। আর তাদেরই কি না টাইগাররা হারিয়ে দিয়ে বড় অঘটনেরই জন্ম দিয়ে বসলো। 

দিনটি ছিল ৩১ মে, নর্দম্পটনে বাংলাদেশ খেলতে নেমেছিল তখনকার ক্রিকেট পরাশক্তি পাকিস্তানের বিপক্ষে, যারা সেবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো দল নিয়েই বিশ্বকাপে খেলতে গিয়েছিল। তাদের বিপক্ষে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ সামর্থ্যের সেরাটা দিয়েই চেষ্টা করেছিল। কোনো ব্যাটসম্যান ফিফটি না পেলে সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় টাইগাররা ৯ উইকেট হারিয়ে ২২৩ রান করে ফেলেছিল, যা পাকিস্তানের বিপক্ষে তখন জয়ের সমতুল্যই ভাবা হয়েছিল। 

ক্রিকেট বিধাতা তখন মুচকি হেসে হয়তো বলছিলেন- আমি তো আজ টাইগারদের জয়ের মালা পরানোর জন্যই বসে আছি! যদিও বিষয়টি বাস্তবে কল্পনা করাও ছিল অসম্ভব। ম্যাচের আগে টিম ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে চাকরি হারান কোচ গর্ডন গ্রিনিজ। খেলোয়াড়রা ছিলেন মানসিকভাবে দিশেহারা। টিম মিটিং পর্যন্ত ম্যাচের আগে হয়নি। অথচ মাঠে নেমে যেন অন্যরকম এক তেজ করছিল বাংলাদেশ দলের সব খেলোয়াড়ের।

বল হাতে নামা টাইগারদের হয়ে নতুন বল তুলে নেন খালেদ মাহমুদ সুজন। তার প্রথম ওভারেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন শহীদ আফ্রিদি। এরপর একে একে ইজাজ আহমেদ, সাঈদ আনোয়ার, ইনজামাম উল হক এবং সেলিম মালিক ফিরে যাওয়ায় পাকিস্তানের স্কোর দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ৪২! 

ওয়াসিম-মঈন-সাকলাইনরা ব্যাট হাতে সামান্য লড়াই করায় পাকিস্তানের স্কোর দেড়শ পার করতে পারলেও ১৬১ রানেই অলআউট হয় সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। আর  বাংলাদেশের ৬২ রানের অবিশ্বাস্য জয়ের আনন্দে ভেসে যায় টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া।

২০ বছরে বাংলাদেশের ক্রিকেটে অনেক পরিবর্তন এসেছে। সমীহ জাগানো দল হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করা টাইগাররা ওয়ানডেতে সর্বশেষ ৪ দেখায় পাকিস্তানে হারিয়ে ছেড়েছে। ২০১৫ সালে ঘরের মাঠে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করাসহ এশিয়া কাপেও পাকিস্তানকে হারিয়েছে বদলে যাওয়া বাংলাদেশ।   

সব মিলিয়ে দুই দলের দেখায় ৩৬ ম্যাচে পাকিস্তানের জয় ৩১, বাংলাদেশের ৫। ২০১৫ সালের আগে দুই দলের লড়াই ছিল একতরফা। ১৯৮৬ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত পাকিস্তান জিতেছে ৩১ ম্যাচ এবং বাংলাদেশের একমাত্র জয়টি ছিল ১৯৯৯ বিশ্বকাপে। সেই অতীত অনেক আগেই পেছনে ফেলে এসেছে টাইগাররা। 

বাংলাদেশ দলের কোচ স্টিভ রোডস বলেন, আমি সত্যিই পাকিস্তানের বিপক্ষে শুক্রবারের ম্যাচটির অপেক্ষায় আছি। আমি মনে করি এশিয়া কাপে আমরা তাদের হারিয়েছি এবং তারা সেটার প্রতিশোধ নিতে চাইবে। এ বছর কিছু ম্যাচে আমরা প্রমাণ করেছি যে, আমাদের হারানোটা পাকিস্তানের জন্য কঠিন। তবে আমরা আত্মবিশ্বাসী। আমরা পাকিস্তানকে হারাতে চাই। তাদেরকে হারিয়ে পয়েন্ট পেতে আমরা সবকিছুই করবো। 

কোচ রোডসের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা বলেন, টুর্নামেন্টে আমরা আমাদের সেরা খেলাটা খেলেছি এবং সমর্থকরাও আমাদের দারুণভাবে উৎসাহ দিয়েছে। আশা করছি জয় দিয়ে ভালো অবস্থায় আমরা টুর্নামেন্ট শেষ করবো।

আরআইএস 
 

আরও পড়ুন