• ঢাকা
  • রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০১৯, ০৯:৪৪ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১০, ২০১৯, ০৯:৪৪ পিএম

রোড টু সেমিফাইনাল 

হট ফেবারিট ইংল্যান্ডের টুর্নামেন্ট যাত্রা 

হট ফেবারিট ইংল্যান্ডের টুর্নামেন্ট যাত্রা 

এবারের বিশ্বকাপ শুরুর আগে অনেক ক্রিকেট বোদ্ধাই ইংল্যান্ডকে টুর্নামেন্টের হট ফেবারিট হিসেবে ধরে নিয়েছিলেন। তবে লর্ডসে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে কচুকাটা হয়ে ও শ্রীলঙ্কা-পাকিস্তানের মতো দলের বিপক্ষে হেরে ইংলিশদের আত্মবিশ্বাসে কিছুটা হলেও চিড় ধরেছে।

উদ্বোধনী ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে উড়িয়ে দিয়ে ঘরের মাঠের বিশ্বকাপটা দারুণভাবেই শুরু করেছিল ইংল্যান্ড। ব্যাটিংয়ে বেন স্টোকস ও বোলিংয়ে জোফরা আর্চারের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ইংলিশ লায়নরা সেদিন দিয়েছিল সত্যিকারের সিংহের হুংকার। ৭৯ বলে ৮৯ রান, ১২ রানে ২ উইকেট ও দৃষ্টিনন্দন এক ক্যাচে সেদিন ম্যাচসেরা হয়েছিলেন স্টোকস। ইংল্যান্ড জয় পেয়েছিল ১০৪ রানের বিশাল ব্যাবধানে। 

তবে দক্ষিণ আফ্রিকাকে উড়িয়ে দিয়ে উড়তে থাকা ইংলিশদের পরের ম্যাচেই মাটিতে নামিয়ে আনে পাকিস্তান। বিশ্বকাপ শুরুর ঠিক আগে আগে যে পাকিস্তানকে ৪-০তে নিজেদের মাটিতেই বিধ্বস্ত করেছিল ইংলিশরা, সেই পাকিস্তানের বিপক্ষেই বিশ্বকাপের মঞ্চে তারা হেরে বসে ১৪ রানের ব্যবধানে। শুরুতে ব্যাট করে মোহাম্মদ হাফিজের ৮৯ ও বাবর আজমের ৬৩ রানের ইনিংসের সহায়তায় স্কোরবোর্ডে ৩৪৮ রান জমা করে পাকিস্তান। জবাব দিতে নেমে জো রুট ও জস বাটলারের জোড়া সেঞ্চুরিও যথেষ্ট হয়নি ইংল্যান্ডের জন্য। ৯ উইকেটে ৩৩৪ রানেই থামতে হয় তাদের। 

পাকিস্তানের বিপক্ষে ধাক্কা খেয়ে ছন্দে ফিরতে সময় নেয়নি স্বাগতিকরা। নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে বাংলাদেশকে ১০৬ রানের বিশাল হার উপহার দেয় তারা। শুরুতে ব্যাট করে জেসন রয়ের ১৫৩ রানের ইনিংসে ভর করে ৩৮৬ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় ইংল্যান্ড। জবাব দিতে নেমে সাকিব আল হাসানের সেঞ্চুরি সত্ত্বেও ২৮০ রানেই থামে বাংলাদেশ। 

চতুর্থ ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজও পাত্তা পায়নি ইংল্যান্ডের কাছে। শুরুতে ব্যাট করে শক্তিশালী ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ক্যারিবীয়রা পায় 'মাত্র' ২১২ রানের সংগ্রহ। মার্ক উড ও জোফরা আর্চার , দুজনই শিকার করেন ৩টি করে উইকেট। তাদের সাথে যোগ দেন পার্ট টাইমার জো রুট, ২৭ রানে তুলে নেন ২ উইকেট। জবাব দিতে নেমে জো রুটের অপরাজিত ১০০ রানে সহজেই ম্যাচ জিতে ঘরে ফেরে ইংলিশরা। 

এরপরের ম্যাচে মরগান ঝড়ে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় আফগানিস্তান। মাত্র ৭১ বল খেলে ১৪৮ রান করেন ইংলিশ অধিনায়ক, ১৭ ছক্কা মেরে করেন বিশ্বরেকর্ড। ইংল্যান্ড পায় ৩৯৭ রানের বিশাল সংগ্রহ। এবারের বিশ্বকাপে এটিই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ দলীয় ইনিংস। জবাব দিতে নেমে ৫০ ওভার খেলে ৮ উইকেটে ২৪৭ রানে থামে আফগানিস্তান, ইংল্যান্ড ম্যাচ জিতে নেয় ১৫০ রানে। 

তবে টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ড সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা খায় নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে। লঙ্কানদের দেয়া ২৩৩ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে লাসিথ মালিঙ্গার বোলিং তোপে ২১২ রানেই অলআউট হয়ে যায় ইংল্যান্ড। ১০ ওভারে ৪৩ রান খরচায় ৪ উইকেট নেন মালিঙ্গা। 

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হেরে টুর্নামেন্টে ইংল্যান্ডের ভবিষ্যত নিয়েই শঙ্কার জোয়ার ওঠে। লর্ডসে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৬৪ রানের পরাজয়ে সেই শঙ্কা আরও গাঢ় হয়। টস হেরে ব্যাট করতে নামা অজিরা অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চের সেঞ্চুরি সত্ত্বেও ৩০০'র নিচেই আটকে যায়। জবাব দিতে নেমে জেসন বেহরেনডর্ফ ও মিচেল স্টার্কের বোলিং তোপে ইংলিশ টপ অর্ডার চূড়ান্ত ব্যর্থতার পরিচয় দেয়। শেষমেশ বৃথা যায় বেন স্টোকসের ৮৯ রানের লড়াকু ইনিংসও। বেহরেনডর্ফ ৪৪ রান খরচায় নেন ৫ উইকেট। ৪৩ রানে ৪ উইকেট নেন মিচেল স্টার্ক। 

টানা দুই ম্যাচ হেরে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি ইংল্যান্ডের জন্য পরিণত হয় 'ডু ওর ডাই'য়ে। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে জনি বেয়ারস্টোর ১১১ রানে ভর করে ৩৩৭ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় ইংল্যান্ড। জবাবে ব্যাট করতে নেমে রোহিত শর্মার সেঞ্চুরিও বাঁচাতে পারেনি ভারতকে। ৫০ ওভার শেষে ৫ উইকেটে ৩০৬ রানে থামে ভারতের ইনিংস। 'ফিনিশার' ধোনি সেদিন ম্যাচ জিতিয়ে আসতে ব্যর্থ হওয়ায় সমালোচকদের তীক্ষ্মবাণে জর্জরিত হন। 

শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে হারালেই যাওয়া যাবে সেমিফাইনালে- এমন সমীকরণ মাথায় নিয়ে মাঠে নামে ইংলিশরা। শুরুতে ব্যাট করে জনি বেয়ারস্টোর ব্যাক টু ব্যাক সেঞ্চুরিতে ৩০৫ রানের সংগ্রহ পায় ইংল্যান্ড। জবাবে ব্যাট করতে নেমে স্কোরবোর্ডে কিউইরা তুলতে পারে মাত্র ১৮৬ রান। 

সেমিফাইনালে এবার ইংল্যান্ডের প্রতিপক্ষ আবারও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়া। প্রস্তুতি ম্যাচ ও রাউন্ড রবিন লীগের দুই ম্যাচেই অজিদের কাছে হেরেছে এউইন মরগানের দল। এবার কি মিলবে সৌভাগ্যের চাবি?

এমএইচএস 
 

আরও পড়ুন