• ঢাকা
  • সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২
প্রকাশিত: জুলাই ১৩, ২০১৯, ০৮:১৮ পিএম
সর্বশেষ আপডেট : জুলাই ১৩, ২০১৯, ০৮:৩১ পিএম

ফাইনালের ভেন্যু লর্ডস সম্পর্কে চমকপ্রদ ১০ তথ্য 

ফাইনালের ভেন্যু লর্ডস সম্পর্কে চমকপ্রদ ১০ তথ্য 
ক্রিকেটের তীর্থ লর্ডস। ফাইল ছবি

ক্রিকেট বিশ্বকাপের ফাইনালের অপেক্ষায় এখন অপেক্ষা করছে গোটা ক্রিকেটবিশ্ব। আগামীকাল রোববার (১৪ জুলাই) বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ফাইনালে স্বাগতিক ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হবে টানা দ্বিতীয়বারের মতো ফাইনালে ওঠা নিউজিল্যান্ড। 

ক্রিকেটের মক্কা বলে পরিচিত লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডের ফাইনালে আয়োজিত হতে যাচ্ছে এবারের বিশ্বকাপের ফাইনাল। ক্রিকেটের এই তীর্থ সম্পর্কে আজ থাকছে ১০টি চমকপ্রদ তথ্য। 

১। ১৮১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত এই ক্রিকেট মাঠের অবস্থান লন্ডনের সেইন্ট জন'স উডে। লর্ডসকে বলা হয়ে থাকে 'হোম অফ ক্রিকেট'। স্টেডিয়ামটির মালিকানা রয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট ব্র্যান্ড মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) হাতে। এমসিসি ক্রিকেটের নানা নিয়ম-কানুনের কপিরাইটেরও সত্ত্বাধিকারী। ক্রিকেটের নানা নিয়ম নীতিতে পরিবর্তন আনা বা সংস্কার করার অধিকার কেবল এই এমসিসির। 

বাংলাদেশের সাকিব আল হাসানও এখন এমসিসির সম্মানিত সদস্য

২। ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড, মিডলসেক্স কান্ট্রি ক্রিকেট ক্লাব, ইউরোপিয়ান ক্রিকেট ক্লাবের ঘরের মাঠ হলো লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ড। ২০০৫ সাল পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের আনুষ্ঠানিক সদর দফতরও ছিল লর্ডস, পরে যদিও তা দুবাইতে স্থানান্তরিত হয়। ব্রিটিশ সরকারের পে কর্পোরেশন ট্যাক্স পরিশোধ করতে অস্বীকৃতি জানানোয় সরকারের অনুরোধে আইসিসি তাদের সদর দফতর স্থানান্তর করে। 

লর্ড'সের অনার্স বোর্ড। ফাইল ছবি

৩। রাজকীয় লর্ডসের ড্রেসিং রুমটাও বেশ রাজকীয়। এই মাঠে টেস্ট ক্রিকেটে সেঞ্চুরি করা ব্যাটসম্যান ও ইনিংসে ৫ উইকেট কিংবা ম্যাচে ১০ উইকেট পাওয়া বোলারদের কীর্তির সাক্ষ্য হিসেবে এখানে রয়েছে 'অনার্স বোর্ড'। পরবর্তীতে ওয়ানডে ক্রিকেটের এসব কীর্তিও অনার্স বোর্ডে যুক্ত হতে থাকে। 

৪। ১৯৩০ সালে লর্ডসে ২৫৪ রানের এক অনবদ্য ইনিংস খেলেছিলেন কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান ডন ব্র্যাডম্যান। লর্ডসের মাটিতে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস হিসেবে এই রেকর্ড টিকে ছিল দীর্ঘ ৬০ বছর। ১৯৯০ সালে ইংলিশ ব্যাটসম্যান গ্রাহাম গুচ ভারতের বিপক্ষে লর্ডসে ৩৩৩ রানের অতিমানবীয় এক ইনিংস খেলে সেই রেকর্ড ভেঙে দেন। বিদেশী ক্রিকেটারদের মধ্যে লর্ডসে টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ উইকেটের মালিক হলেন অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন ম্যাকগ্রা (২৬ উইকেট)। 

 

লর্ডসের মাটিতে সর্বোচ্চ ৩৩৩ রানের ইনিংস খেলার পথে গ্রাহাম গুচ। ছবিঃ ইন্টারনেট

৫। লর্ডসের মাঠের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্ত তার উত্তর পশ্চিম প্রান্তের তুলনায় আড়াই মিটার নিচু ছিল! এ কারণে বৃষ্টি হলে খুব সহজেই পানি জমে যাওয়ায় ক্রিকেট চালিয়ে নিতে বেশ অসুবিধা হচ্ছিল। ২০০২-০৩ মৌসুমে এ কারণে ২০ লক্ষ ইউরো খরচ করে লর্ডসের আউটফিল্ড সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়। 

৬। লর্ডসে আয়োজিত প্রথম টেস্ট ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। ১৮৮৪ সালে আয়োজিত সেই ম্যাচে ইনিংস ও ৫ রানের ব্যবধানে অজিদের হারায় স্বাগতিকরা। লর্ডসে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে প্রথম জয়টি আসে ১৮৮৮ সালে। 

৭। আশ্চর্যের বিষয় হলো ১৯৩৪ থেকে শুরু করে ২০০৯ সাল পর্যন্ত লর্ডসে স্বাগতিক ইংল্যান্ড কখনোই অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারেনি! লর্ডসে ইংলিশদের দীর্ঘ ৭৫ বছরের জয়খরা কাটে  ২০০৯ অ্যাশেজে। 

এমসিসি জাদুঘর। ছবিঃ ইন্টারনেট

৮। লর্ডস ক্রিকেট গ্রাউন্ডে পৃথিবীর প্রাচীনতম ক্রীড়া জাদুঘর 'এমসিসি মিউজিয়াম' অবস্থিত। যে ছাই দিয়ে সর্বপ্রথম অ্যাশেজ সিরিজের সূত্রপাত, সে ছাই এখনো এই জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। ১৯৩৬ সালে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় দলের বোলার জাহাঙ্গির খানের একটি বল লেগে মৃত্যু হয়েছিল এক চড়ুই পাখির। সেই চড়ুইয়ের একটি প্রতিকৃতিও জায়গা পেয়েছে এমসিসি মিউজিয়ামে। 

৯। ক্রিকেটের সবচেয়ে সম্মানজনক মাঠ এই লর্ডস, তবে এই মাঠেই রয়েছে একটি পূর্ণদৈর্ঘ্য টেনিস কোর্ট। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় লর্ডসে আমেরিকান ও কানাডিয়ান বেসবল দলের মধ্যে একটি দাতব্য বেসবল ম্যাচও আয়োজন করা হয়েছিল। ২০১২ অলিম্পিকের আর্চারি ইভেন্ট আয়োজিত হয়েছিল লর্ডসে। প্যাভিলিয়নের সামনে অ্যালেন স্ট্যান্ডে ছিল আর্চারদের তীর ছোঁড়ার জায়গা। তাদের টার্গেট বোর্ডগুলো টানানো ছিল গ্র্যান্ড স্ট্যান্ডের সামনে। 

চলছে এটন কলেজ ও হ্যারো স্কুলের বার্ষিক ক্রিকেট ম্যাচ (১৯১৩)

১০। লর্ডসের মাটিতে সবচেয়ে প্রাচীন ক্রীড়া দ্বৈরথ হলো এটন কলেজ ও হ্যারো স্কুলের মধ্যকার বার্ষিক ম্যাচ। এই দুই স্কুলের বালকদের লড়াই লর্ডসে চলে আসছে ১৮০৫ সাল থেকে। যদিও নবনির্মিত স্টেডিয়ামে এই খেলা আয়োজিত হয় না, লর্ডসের পুরাতন মাঠ আয়জন করে থাকে এই ম্যাচের। 

এমএইচএস