
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ন্যাশনাল গেম ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজারের পদ থেকে নাজমুল আবেদীন ফাহিম পদত্যাগের কারণ নিয়ে এখনো নানা মহলে চলছে আলোচনা। দায়িত্ব পালনে অতিমাত্রায় সীমাবদ্ধতার সম্মুখীন হওয়ার কারণেই অফ ফর্মে চলে যাওয়া খেলোয়াড়দের শেষ ভরসার জায়গা সবার প্রিয় ফাহিম স্যারের বিদায় বলেই অনেকে মনে করছেন।
ফাহিম ২০০৫ সালে বিসিবিতে নিজের চাকরি জীবন শুরু করেন। হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের সিনিয়র কোচের দায়িত্ব পালনের পর তিনি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব ১৯ দলের কোচ হন। পরবর্তীতে তিনি ন্যাশনাল গেম ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কোচ, খেলোয়াড়, অফিসিয়াল এমনকি গণমাধ্যম কর্মীদের কাছেও তিনি অতি প্রিয় এক মানুষ।
এবার নাজমুল আবেদীন ফাহিম পদত্যাগের বিষয়ে মুখ খুলেছেন তার বন্ধু এবং বিসিবি'র চাকরি ছাড়া আরেক কোচ সারওয়ার ইমরান। তার মতে, বিসিবির ‘ইয়েস স্যার’ নীতিতে চলতে না পারা এবং কাজ করার পরিবেশ না থাকার জন্যই তিনি সরে গেছেন।
সারওয়ার ইমরান বলেন, কোচিংয়ে শুধু টেকনিক্যালি নয় মনস্তাত্ত্বিকভাবেও তার গভীরে যাওয়ার ক্ষমতা ছিল। তিনি খুবই সফল এবং ভালো কোচ। আমরা একসঙ্গে বিকেএসপিতে অনেকদিন কাজ করেছি। তার হাতে অনেক খেলোয়াড় তৈরি হয়েছে।
তিনি বলেন, অনেক সময় যখন অফিসে ‘ইয়েস স্যার’ নীতি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে যায়। ফাহিম ভাইয়ের ভেতরে এই বিষয়টি নেই। গেম ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার হিসেবে তার কাজ করার অনেক জায়গা ছিল, যা তার জন্য অনেক সংকুচিত হয়ে আসছিল।
সাকিব-মুশফিক-রিয়াদদের ব্যাচের ক্রিকেটারদের পরিণত হতে নাজমুল আবেদীন ফাহিমের আবদান রয়েছে। এখনো কোনো সমস্যায় পড়লে প্রিয় ফাহিম স্যারের কাছে ছুটে যান মুশফিক-সৌম্য-মুমিনুলের মতো ক্রিকেটাররা।
নাজমুল আবেদীন ফাহিমের ছাত্র এবং ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যতম সফল কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের দাবি, বিসিবি এই গুণী কোচের সম্মান দিতে কার্পণ্য করেছে। তিনি বলেন, আমার বাবা হয়তো আমাকে জন্ম দিয়েছেন। কিন্তু আমি আজ যে অবস্থানে আছি সেটা তার অবদান। শুধু আমার নয়, অনেক ছেলেরই আজকের ভালো অবস্থানের জন্য তার অবদান আছে। যখন আমার অবস্থা খারাপ ছিল তখন উনি আমাকে ডেকে নিয়ে কোচিং ক্যারিয়ারে আসতে বলেছিলেন।
তিনি বলেন, যেসব ছেলেদের মানসিক এবং টেকনিকে সমস্যা বেশি তাদের বিষয়গুলো উনি খুব সুন্দরভাবে সমাধান করতে পারতেন। শুধু কোচ হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে তাকে সবাই অনেক বেশি শ্রদ্ধা করে। উনি প্রতিটি ছেলের খুঁটিনাটি বিষয়ে উনি খোঁজ-খবর রাখতেন।
বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দীন চৌধুরী জানিয়েছেন, ফাহিমকে রেখে দিতে চায় বিসিবি। কিন্তু নিজের সিদ্ধান্তে তিনি অনড় অবস্থানে আছেন। ক্রিকেট পাড়ায় গুঞ্জন, বোর্ডের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে দ্বন্দ্বের জেরে কোণঠাসা হয়েই তিনি বিদায় নিচ্ছেন।
সূত্র : যমুনা টিভি
আরআইএস