
চোখে ধুলো জমেছিল বেশ, ধীরে ধীরে হয়ে আসছিল সব অন্ধকার। কিন্তু একটু হালকা বাতাসেই উড়ে গেছে সব ধুলো। চোখে বসেছে রঙিন চশমা। যার আয়নার আড়ালে ঢাকা যায় সব বালি। বাংলাদেশের ক্রিকেট আকাশেও জমেছিল ঘুটঘুটে অন্ধকার এক মেঘ। তাতে আমাদের হা-হুতাশও ছিল অনেক।
তবে একটা মাত্র জয়ই দূরে সরিয়ে দিয়েছে সব। সেই কালো মেঘ কাটিয়ে দেখা দিয়েছে সূর্য কিরণ। সমর্থকরাও ভুলে গেছে সব। আমাদের প্রায় এক মাসের হাপিত্যশ। আফগানিস্তান জুজু নামের যে ভয় ঢুকেছিল মনে, তা কাটানো গেছে বটে; কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেটে যে অসঙ্গতি তার সব কী ঢাকা দেয়া গেছে?
আফগানিস্তান বাংলাদেশে এসেছিল ৩০ আগষ্ট। সরাসরি পা রেখেছিল চট্টগ্রামে, সেখানেই বাংলাদেশের বিপক্ষে খেলেছে একমাত্র টেস্ট। ক্রিকেটের অভিজাত সংস্করণের নবীনতম দলটি জয় পায় দুই দশক ধরে টেস্ট খেলা বাংলাদেশের বিপক্ষে। তাও একেবারে দাপুটে জয়, ২২৪ রানের। পাঁচ দিনের ম্যাচের এক মুহূর্তও নিয়ন্ত্রণে নিতে পারে না সাকিব-মুশফিকরা।
চারদিকে তখন হায় হায় রব। দেশের ক্রিকেটাকাশে কালো মেঘের ছায়া তখন সবার কাছে স্পষ্ট। ঘরোয়া ক্রিকেট নিয়ে বিসিবির উদাস মনোভাবে ক্ষিপ্ত সবাই। তা অনুচিত নয় অবশ্যই। সেই গেল গেল রব আরও ঘনিভূত হয় ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম ম্যাচে এসে।
দগদগে ক্ষততে যেন আস্তে করে টোকা দিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। হারতে হারতে জয় পায় বাংলাদেশ। মাত্র দ্বিতীয় টি-টুয়েন্টি খেলতে নামা এক ক্রিকেটারের কল্যাণে। অতীত স্মৃতি নিয়ে ভাববার সময় নেই যাদের, তারা সব ভুলে যান সেখানেই। উল্লাসে মাতেন দলসহ।
অস্থির জাতিকে পুনরায় ব্যর্থতায় ফেরান আফগানিস্তানের ক্রিকেটাররা। এদেশের ক্রিকটাকাশে যে মেঘ জমেছে তা মনে করিয়ে দেন ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশকে হারিয়ে দিয়ে। তবুও তাতে দমে যান না ক্রিকেটের ভক্ত-সমর্থকরা। আঙ্গুল দিয়ে র্যাংকিং দেখিয়ে প্রমাণ করেন, এই হারে তেমন কিছু যায় আসে না। টি-টুয়েন্টিতে আফগানিস্তান আমাদের চেয়ে শক্তিশালি ইত্যাদি ইত্যাদি।
এরপরের কৃতিত্বটা অবশ্যই বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের। টানা দুই ম্যাচ জয়ে তারাই তো প্রমাণ করেন ঠিক পথে আছে দেশের ক্রিকেট। এর মধ্যে দ্বিতীয় জয়টা বেশি জোড়ালো। তা সাকিবের একক বীরত্বেই হোক বা যেভাবে, জয়টাই তো মূখ্য। এই এক জয় আড়াল করে দেয় সব।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট হারসহ সব ব্যর্থতা ঢাকা পড়ে এক জয়ে। ভুলিয়ে দেয় আফগানিস্তানের বিপক্ষে পাঁচ বছর পর টি-টুয়েন্টিতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। শেষে বৃষ্টি আসে, সেই ভুলাটার স্থায়িত্ব দীর্ঘ করে। আবারো প্রমানিত হয়, দেশের ক্রিকেট ঠিক পথেই আছে।