সিলেট টেস্টে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১৫১ রানের বিশাল জিতে দুই ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল জিম্বাবুয়ে।
মঙ্গলবার (৬ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় শুরু হওয়া ম্যাচের চতুর্থ দিন বিনা উইকেটে ২৬ রান নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাট করতে নেমে ১৬৯ রানে অলআউট হয়।
ওপেনিং জুটিতে ৫৬ রানের জুটি গড়ার পর সিকান্দার রাজার বলে ৭৫ বল খেলে ৩ চারের মারে ২৩ রান করা লিটন লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন। আম্পায়ার লেগ বিফোরের আবেদনে সাড়া না দিলেও জিম্বাবুয়ে রিভিউ নিয়ে সফল হয়।
দলীয় ৬৭ রানের মাথায় জারভিসের এক্সট্রা বাউন্সের বল মুমিনুল কোনাকোনি ব্যাটে খেলতে গেলে বল তার ব্যাটের কানায় লেগে স্টাম্পে আঘাত হানলে তিনি ২ চারের মারে ৯ রান করে বিদায় নেন।
১০৩ বলে ৬ চারের মারে ৪৩ রানের ইনিংস খেলা ইমরুল ২ বার জীবন পেয়েও বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হলেন। সিকান্দার রাজার একদম নিচু হয়ে আসা বল অপ্রয়োজনীয়ভাবে প্যাডেল সুইপ করতে গিয়ে বলের লাইন মিস করেন ইমরুল। রাজার টার্নের কাছে ইমরুল পরাস্ত হন এবং বল লেগ স্টাম্পে আঘাত হানলে তিনি বিদায় নেন।
এর আগে অবশ্য কাইল জারভিসের বলে ব্যক্তিগত ২২ রানে জীবন পান ইমরুল কায়েস। প্রথম স্লিপে থাকা টেলর ও দ্বিতীয় স্লিপে থাকা মাসাকাদজা দ্বিধার মধ্যে থাকায় কেউই যথেষ্ট চেষ্টা ক্যাচ ধরার জন্য করেননি। সুযোগটা অবশ্য প্রথম স্লিপে থাকা টেলরের দিকেই বেশি ছিল, তবে তা নিতে তিনি ব্যর্থ হন।
জারভিসের পরের ওভারেও অল্পের জন্য বেঁচে যান ইমরুল। প্রথম স্লিপে থাকা টেলরের সামান্য সামনে বল ড্রপ খেলে তার পায়ের ফাঁক দিয়ে চলে যায় সীমানার বাইরে।
রিয়াদ ৪৪ বলে ১৬ রানের রক্ষণাত্মক ইনিংস খেলার পর রাজার বলে বাজে স্ট্রোক খেলে শর্ট লেগে দাঁড়িয়ে থাকা দ্বাদশ খেলোয়াড় আরভিনের হাতে ধরা পড়েন এবং দলকে বিপদে রেখে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন।
লাঞ্চের ঠিক আগের বলে মাভুতার করা এক্সট্রা বাউন্সের সাথে গুগলি বলে শান্ত অহেতুক শট খেলতে খেলেন এবং কভারে দাঁড়িয়ে থাকা রাজা ঝাঁপিয়ে পড়ে ক্যাচ ধরেন।
লাঞ্চের পর মাভুতার বলে সুইপ করেছিলেন মুশফিক। কিন্তু বলটি তার ব্যাটের ওপরের অংশে লেগে উঠে যায় এবং ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ থেকে অনেকখানি দৌড়ে এসে দারুণ এক ক্যাচ নেন ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। তাতে শেষ হয় মুশফিকের ১৩ রানের ইনিংস।
তার খানিক পর মাভুতার করা দারুণ বল মিডল স্টাম্পের ওপর থাকায় মিরাজ রক্ষণাত্মক শট খেলেন। কিন্তু বল স্পিন করে অফ স্ট্যাম্পের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার মুখে মিরাজের ব্যাট স্পর্শ করে উইকেট কিপারের গ্লাভসে জমা পড়ে। তাতে ৭ রান করে বিদায় নেন মিরাজ।
এরপর তাইজুল রানের খাতা খোলার আগেই তাকে বিদায় করেন প্রথম টেস্ট উইকেট পান ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। লং অনে তাইজুলের ক্যাচ নেন টেলর।
নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে তাইজুলের মতো শূন্য রানে সাজঘরে ফেরেন অপু। মাভুতার বলে আম্পায়ার আউট দেয়ার পরে অপু রিভিউ নিলেও শেষ রক্ষা হয়নি।
ব্যাটসম্যানদের চরম ব্যর্থতার মাঝে গোটা টেস্ট ব্যতিক্রম ছিলেন অভিষিক্ত আরিফুল হক। প্রথম ইনিংসে ৪১ রানে অপরাজিত থাকার পর দ্বিতীয় ইনিংসে তিনি ৩৭ বলে ৪ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কার মারে ৩৮ রান করার পর শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়েলিংটন মাসাকাদজার বলে চাকাভার গ্লাভসে ধরা পড়লে খেলার সমাপ্তি ঘটে এবং লজ্জাজনক পরাজয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
জিম্বাবুয়ে ২৮২ এবং ১৮১
বাংলাদেশ ১৪৩ এবং ১৬৯
ফল: জিম্বাবুয়ে ১৫১ রানে জয়ী
ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ: শন উইলিয়ামস