
শীতের আগমনী বার্তা দেখা মিলে ঢাকার আকাশে। ভোরে সূর্যোদয়ের আগে খানিক কুয়াশার আবরণে ঢাকা পড়ে ব্যস্ত নগরী। এই দৃশ্যে দেখে ক্রিকেটপ্রেমিদের কারও কারও হয়তো মনে পড়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটের বর্তমান হালচাল। দেশের ক্রিকেটটা ব্যস্ত থাকে বরাবরই, তাতে ভোরও আসে নিয়ম করে। খানিক স্থবির হয়ে পড়ে চারপাশ, একদম শীতের আগমনী বার্তার মতো।
তবে এরকম যে কখনও হয়নি। সূর্যোদয়ের আগে যে কুয়াশা, তা এতোটাই গাঢ় যে সামনে আর দেখা যায় না কিছুই। এমন অন্ধকারচ্ছন্ন পরিবেশেই যে কয়েকজনের হাতে আশার প্রদীপ জ্বালানোর দিয়াশলাই, তারা এখন ভারতের দিল্লিতে।
প্রদীপের খোঁজটাও পাওয়া গিয়েছে। তবে দিয়াশলাই জ্বালানোর আগে প্রতিবন্ধকতাও আছে। যতটা না প্রতিপক্ষ ভারতের, তার চেয়ে বেশি নিজ দেশের। বাংলাদেশের ক্রিকেটের যে দুই ধ্রুবতারা, তাদের ছাড়াই অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মাঠে নামবে টাইগাররা।
দুই তারকা সাকিব আর তামিম ছাড়া বাংলাদেশের যে পরিসংখ্যান সেটাতো ভারতের বিপক্ষে টি-টুয়েন্টিতে মুখোমুখি হওয়া লড়াইয়ের মতোই দুরবস্থা। ভারতের বিপক্ষে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত সংস্করণে বাংলাদেশ মুখোমুখি হয়েছে ৮ বার, যার সবগুলোতেই গেছে হেরে।
ব্যক্তি জীবনের দুই বন্ধুকে ছাড়া টি-টুয়েন্টি খেলার পরিসংখ্যানটাও একই রকম। সাকিব-তামিম ছাড়া খেলা তিন টি-টুয়েন্টির সবগুলোতেই হেরে গেছে বাংলাদেশ। এককভাবে সাকিব ছাড়া ১৩ ম্যাচে ৩ জয়। তামিম ছাড়া ১৭ ম্যাচে এসেছে ৬ জয়।
এসব তো দুশ্চিন্তার খবর। গত কয়েক বছরে ভারত-বাংলাদেশ লড়াই যে মহারণে রূপ নিয়েছে, তার আগে দাঁড়িয়ে এসব দুশ্চিন্তাই মাথায় পেঁচিয়ে যাচ্ছে। প্রহর গুণতে গুণতে আশার আলোও দেখছে অবচেতন মনে, সেসব যদিও পরিসংখ্যান দ্বারা সমৃদ্ধ নয়।
তবে মানুষের মনের জোরই তো আসল। মুশফিক-রিয়াদদের অভিজ্ঞতার সঙ্গে যদি নাঈম শেখ, লিটন দাস, মোস্তাফিজরা জয়ের ‘নতুনের কেতন উড়ান’। তাহলে খুব কী অসম্ভব ভারতকে হারানো? খুব? মহারণের আগে আগে তো সেটা মনে হচ্ছে না মোটেও। বরং বারবারই অবচেতন মন বলছে টাইগারদের ‘হারিয়ে দেবো’ মানসিকতা থাকলেই ভেঙে দেয়া যাবে ভারতের জয়ের পিরামিডসম পরিসংখ্যান।
আর তাহলে? তাহলে তো আশার প্রদীপ হাতে মুশফিক-রিয়াদরা দাঁড়িয়ে থাকবেন না। বরং সাকিবকে হারানোর যন্ত্রণা কিংবা তামিমের না থাকার বেদনা খানিকটা ভুলিয়ে দিয়ে হলেও জ্বালিয়ে দেবেন আশার মশাল। সেটারই তো অপেক্ষায় দেশের কোটি কোটি ভক্ত আর সমর্থক।
এমএইচবি/এসএমএম