
সিলেটের বিপক্ষে ৮০ রানের বিশাল ব্যবধানে পরাজয় প্রসঙ্গে খুলনা টাইগার্সের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম বলেছেন বলেন, টুর্নামেন্টটা এখন জমে গেল। আসলে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট এমন একটা খেলা, যারা হারতে থাকে তাদের কিন্তু আর হারানোর কিছু থাকে না। ওরা দুইজন (জনসন চার্লস এবং আন্দ্রে ফ্লেচার) যেভাবে ব্যাটিং করেছে তাতে সেটাই প্রমাণিত। কারণ ওরাও জানতো যে এখানে ১৩০-১৪০ করে কিছু হবে না। তাই যা পারি প্রথম থেকেই করে ফেলি।
মি. ডিপেন্ডেবল বলেন, অন্য কোনো দল হলে হয়তো ওভাবে প্ল্যান করতো যে ১৭০-১৮০ করবো। কিন্তু ওদের মধ্যে এমন কিছু ছিলো না। ওরা শুরু থেকেই ভেবেছে যে যত বেশি করা যায়। আমার মনে হয় যে, এমন দলগুলোই বেশি বিপদজনক।
তিনি আরও বলেন, ‘এই ফরম্যাটে ১-২টা ব্যাটসম্যান রান করলেই হয়ে যায়, বড় দলকে হারানোর জন্য। তারা আজকে ভালো খেলেছে, বোলিং ডিপার্টমেন্টও ভালো ছিলো। খেয়াল করলে দেখবেন, পাঁচটা পরিবর্তন এনেছিল ওরা। এটাও কম্বিনেশনে একটা প্রভাব ফেলেছে। কারণ আমাদের অনেক খেলোয়াড় হয়তো তাদের আগে দেখেনি বা খেলেনি। এটাও একটা কারণ হতে পারে। তবে সবমিলিয়ে আমরা পুরো ম্যাচটাই ভালো খেলতে পারিনি। আশা করবো যেন পরের ম্যাচে ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়ে ঠিকঠাক খেলতে পারি।’
চট্টগ্রামে এসে দলের প্রথম ম্যাচেই ৫১ বলে ৯৬ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেছিলেন খুলনা টাইগার্সের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম। তার ইনিংসে ভর করেই রাজশাহী রয়্যালসের করা ১৮৯ রান টপকে দুর্দান্ত এক জয় পায় খুলনা। মুশফিকের সেদিনের ইনিংসের পর তাকে ৩৬০ ডিগ্রি ব্যাটসম্যান হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন খুলনার কোচ জেমস ফস্টার। কিন্তু নিজেকে এমন মানতে রাজি নন মুশফিক। তিনি বলেন, দুই ম্যাচও লাগে না কিন্তু ৩৬০ ডিগ্রি থেকে ০ ডিগ্রিতে আসতে! এটা বাংলাদেশ। এটা (ডি ভিলিয়ার্সের মতো ৩৬০ ডিগ্রি ব্যাটসম্যান) আমি কখনোই বিশ্বাস করি না। আমি নিজেকে কখনোই এরকম খেলোয়াড় মনে করি না। আমি সব সময় চিন্তা করি আমার খেলাটা দিনকে দিন কতটা উন্নত করা যায়।
ঢাকা প্লাটুনের হাসান মাহমুদ, চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের মেহেদি হাসান রানা, রংপুর রেঞ্জার্সের মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ- চলতি বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে আলাদাভাবে নজর কেড়েছেন এ তিন তরুণ পেসার। তবে তাদের নিয়ে অতি মাতামাতিতে বিরক্ত মুশফিক বলেন, ‘আমার মনে হয় তাদেরকে পরবর্তী দুই-তিন বছর স্বাধীনভাবে খেলতে দেন। সামনে বিশ্বকাপ না কি আছে এগুলো বলে চাপ দিয়েন না। দুই-তিন বছর খেলতে দেন, আপনি এমনিই বুঝতে পারবেন কে আসছে না কে বাদ পড়ছে। এটা হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ। শুধু টি-টোয়েন্টি না, টেস্ট এবং ওয়ানডেতেও। তাদের খেলাটা উপভোগ করতে দিন। তাদের ভেতর ওই প্রেশারটা দিয়েন না যে, আরেকটু ভালো করলে হয়তো বিশ্বকাপে (সুযোগ) পেতে পারো।
টাইগারদের সাবেক অধিনায়ক বলেন, ‘তাদেরকে ব্যক্তিকেন্দ্রিক বানিয়ে দিয়েন না। তারা টিমম্যান হিসেবে খেলছে, তারা যেন ব্যক্তি পারফরম্যান্সের দিকে না তাকিয়ে টিমের দিকেই বেশি ফোকাস দেয়। এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এটা শুধু তাদের ক্যারিয়ার না, দেশের জন্যও দরকার। কারণ তারা দেশকে রিপ্রেজেন্ট করবে। তারা যেন নিজের আগে দেশের কথা ভাবে। তারা যেনো নিশ্চিত করে যে, উইকেট না পাক, উইকেট পাওয়ার জন্য যে কাজগুলো সেগুলো যেন ঠিকভাবে করে। এমন যেন না হয় যে, দল যা খুশি করুক, আমি আমারটা নিয়ে করি। দল সবার আগে- এই কালচারটা যেন তাদের মধ্যে থাকে।’
আরআইএস