
লা লিগায় ১৯ ম্যাচ শেষে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের সাথে সমান ৪০ পয়েন্ট অর্জন করে দুই গোল ব্যবধানে এগিয়ে টেবিলের শীর্ষস্থানটি ঠিকই ধরে রেখেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বার্সেলোনা। তারপরও কাতালান জায়ান্টরা বিভিন্ন ধরনের সমস্যা নিয়েই বার্সা এগিয়ে যাচ্ছে বলে একটি বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে স্পেনের গণমাধ্যম মার্কা।
২০০৩-২০০৮ মৌসুম পর্যন্ত সাবেক ডাচ তারকা ফ্র্যাংক রাইকার্ডের অধীনে বার্সেলোনা প্রথম তিনবার লীগের শিরোপা জিততে পারেনি। রাইকার্ডের চতুর্থ ও পঞ্চম মৌসুম ছিল আরও বাজে। সাবেক দুই কোচ লুইস এনরিকের তৃতীয় ও পেপ গার্দিওলার চতুর্থ বছরেও ব্যর্থ হয়েছিল বার্সা। এ সমস্ত অভিজ্ঞতার নিরিখে ক্লাব খুব ভালোভাবেই বুঝতে পারছে, আর্নেস্তো ভালভার্দেকে ধরে রাখাটা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। ইতোমধ্যেই তার কিছু কিছু আলামত দেখে ফেলেছে বার্সা। লা লিগায় শীর্ষস্থানটি ধরে রাখলেও দলের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা।
রক্ষণভাগের দুর্বলতা : বিশ্বের অন্যতম সেরা গোলরক্ষক মার্ক-আন্দ্রে টের স্টেগান গোলবার সামলানোর দায়িত্ব পাওয়ায় কিছুটা হলেও রক্ষণভাগের দুর্বলতা ঢাকতে সক্ষম হয়েছে বার্সেলোনা। কিন্তু তাতেই কি সমাধানের পথ খুঁজে পেয়েছে ভালভার্দের শিষ্যরা? ইতোমধ্যেই ১৯ ম্যাচে ২৩টি গোল হজম করতে হয়েছে; ২০০৩-০৪ মৌসুমের পর যা সবচেয়ে বাজে পারফরম্যান্স। রিয়াল মাদ্রিদ (১২) ও অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের (১২) তুলনায় যা প্রায় দ্বিগুণ। যা অ্যাথলেটিক ক্লাব (১৩), সেভিয়া (১৮) ও গেটাফের (২০) থেকেও বেশি।
অ্যাওয়ে ম্যাচের সমস্যা : এবারের মৌসুমে ন্যু ক্যাম্পের বাইরে মাত্র অর্ধেক পয়েন্ট অর্জন করতে পেরেছে বার্সেলোনা। যদিও এখনো সান্তিয়াগো বার্নাব্যু, এস্তাদিও র্যামোন সানচেজে খেলা বাকি রয়েছে। সেই তুলনায় সেভিয়া, রিয়াল মাদ্রিদ ও রিয়াল সোসিয়েদাদ এবার অ্যাওয় ম্যাচগুলোতেই বেশি পয়েন্ট তুলে নিয়েছে।
ক্যামব্যাক করে আবারো পিছিয়ে যাওয়া : এবারের মৌসুমে তিনবার বার্সেরোনা লীগ টেবিলে পিছিয়ে পড়েছিল। এরপর আবারো লিডে এসে ড্র করে দুই পয়েন্ট হারিয়েছে। এস্পানিওলের বিপক্ষে সর্বশেষ ড্রয়ের মাধ্যমে দুই পয়েন্ট হারানো তারই উদাহরণ।
কম পয়েন্ট অর্জন : মৌসুমের এই সময়ে এসে কাতালানদের অর্জন ৪০ পয়েন্ট যা ২০০৭-০৮ মৌসুমের পর সবচেয়ে কম। ওই আসরে রিয়াল মাদ্রিদ লীগ শিরোপা জয় করেছিল।
মধ্যমাঠে পরিবর্তন : এখনো মধ্যমাঠে সঠিক ফর্মূলাটি খুঁজে পাচ্ছেন না ভালভার্দে। সার্জিও বুস্কেটস এখন আর পরিপূর্ণ ফর্মে নেই। ইভান রাকিটিচ দলের সঙ্গে নতুনভাবে মানিয়ে নিতে এখনো হিমশিম খাচ্ছে, আর্থার মেলো অনেকগুলো ম্যাচ মিস করে ফেলেছেন। মৌসুমের শুরুতে মূল একাদশে খেলেছেন কার্লেস আলেনা। কিন্তু ডিসেম্বরে চারটি ম্যাচ খেলার পর ধারে রিয়াল বেটিসে পাড়ি জমিয়েছেন। আর্তুরো ভিদাল এখন পর্যন্ত সবচেয়ে ধারাবাহিক পারফরম্যান্স দেখিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু তিনি নিয়মিত বদলি বেঞ্চেই থাকেন।
এমএসজি ত্রয়ী : লিওনেল মেসি, লুইস সুয়ারেজ ও আতোঁয়ান গ্রিজম্যান ঘরের মাঠে ভালো করলেও অ্যাওয়ে ম্যাচে নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারছেন না। ইতোমধ্যে তারা সব মিলিয়ে মাত্র ৩১টি গোল করেছেন (মেসি ১৩, সুয়ারেজ ১১ ও গ্রিজম্যান ৭টি)। কিন্তু যদি তারা গোল না পান; তবে বার্সেলোনাকে আরও বিপদে পড়তে হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।
আরআইএস