রাস্তার দুই ধারে সারিসারি রাখা হয়েছে পূজামণ্ডপ থেকে আসা রঙবেরঙের প্রতিমা। সেগুলোর একটি একটি করে ১০০টি পূজা কমিটির স্টল।
কলকাতায় গতকাল ছিল প্রতিমা বিসর্জনের উৎসব। সকাল থেকে রাস্তা বন্ধ ইডেন গার্ডেনের আশপাশের এলাকায়। হ্যাঁ, কলকাতার বিভিন্ন এলাকার সেরা প্রতিমাগুলোই এখানে নিয়ে আসা হয়েছে।
প্রশ্ন উঠতে পারে দশমী শেষ তাহলে এতো পরে কেন বিসর্জন! এখনকার মুখ্যমন্ত্রী (সিএম) মমতা ব্যানার্জি ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই নিয়মটা চালু হয়েছে।
এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। অন্যদিকে প্রায় দেড় মাস পর বাসা থেকে জনসম্মুখে উপস্থিত হয়ে এই উৎসবে যোগ দিচ্ছেন সিএম। সেখানে যুক্ত হচ্ছে কলকাতার লাখো মানুষও। যে কারণে বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস ম্যাচের আগের দিন ইডেন স্টেডিয়ামও বন্ধ করে দেয়া হয় বিকাল ৪টার মধ্যে।
এক কথায় বিকাল থেকেই নানা রং আর আলোর বন্যায় ভেসে গেছে ‘সিটি অব জয়’। তবে এক পাশে উৎসবের আয়োজন চললেও বাংলাদেশ দল আছে কঠিন টেনশনে। তাদের সামনে যে ডাচ পরীক্ষা! ৩৩ বছর পর নন্দন কানন খ্যাত ইডেন গার্ডেনে ওয়ানডে খেলতে নামবে টাইগাররা। টেনশন পাশ মার্ক ছুঁতে পারবে তো বাংলাদেশ! প্রতিপক্ষ অপেক্ষাকৃত ছোট দল বলেই কিনা অঘটনের চিন্তাটা আরো বেশি। চলতি বিশ্বকাপে ডাচরা হারিয়ে দিয়েছে উড়ন্ত ফর্মের দল দক্ষিণ আফ্রিকাকে।
আবার টাইগারদের অতীত ইতিহাস বলে পঁচা শামুকে পা কাটার অভ্যাসটা তাদের বেশ পুরনো। তাই ম্যাচটি জটিল হচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নটা আসতেই পারে দলের সামনে। এলোও তাই! সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত দলের পেসার তাসকিন আহমেদ উত্তারটা দিলেন বাস্তবতা স্বীকার করে নিয়েই।
তিনি বলেন, ‘ম্যাচ হেরে গেলে আসলে ট্রিকি লাগে সবই। এরকম ম্যাচে আরও চাপ থাকে কারণ এখানে প্রত্যাশা বেশি থাকে সবার। জিততে চাই সব ম্যাচই। বলেকয়ে হয়তবা জিততে পারবো না। প্রক্রিয়া মেনে আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলতে পারলে জিতবো ইনশাল্লাহ।’
১৯৯০, এশিয়া কাপে ইডেন গার্ডেনে বাংলাদেশ একমাত্র ওয়ানডে ম্যাচটি খেলেছিল মিনহাজুল আবেদিন নান্নুর নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। সেই ম্যাচে টসে জিতে ব্যাট করতে নেমে লঙ্কানরা ৪ উইকেট হারিয়ে ২৪৯ রান তোলে। জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশ দলের ইনিংস থামে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৭৮ রানে। বলার অপেক্ষা রাখে না ব্যাটিং ব্যর্থতাতেই মেনে নিতে হয়েছিল বড় পরাজয়।
চলতি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের হারের পেছনে বড় কারণ এই ব্যাটিং ব্যর্থতাই। যা স্বীকার করে নিয়েছেন তাসকিন। তবে চলতি বিশ্বকাপে প্রথম ম্যাচে জয় দিয়ে শুরু করেছিল বাংলাদেশ দল। কিন্তু পরের চার ম্যাচে হেরে যেন লেজেগোবরে অবস্থা। যে সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্ন নিয়ে দেশ ছেড়েছিল টাইগাররা আজ তা ধূসর। মাঠে নামার আগে তাই দলের ভরাডুবির ব্যাখ্যাই দিতে হয় সংবাদ সম্মেলনে আসা বাংলাদেশ দলের প্রতিনিধিদের।
কেন এমন হার! ব্যাটিং আর বোলিংয়ে কেন এমন বিপর্যয়! বিশেষ করে পেসারদের কাছ থেকে যেমনটা আশা ছিল তার এক আনাও পূরণ করতে পারেননি তারা। এ নিয়ে তাসকিন বলেন, ‘আসলে পেস বোলিং গত কয়েক বছর ধরে ভালো করছে। ৫ ম্যাচে আমরা তেমন ভালো করতে পারিনি। পেসাররা সাহায্য পাচ্ছে না এটা মনে না করে আমরা আমাদের নিজেদের দিকেই ফোকাস করছি। আমরা কীভাবে আরও ভালো করতে পারি।
অনুশীলন করছি, নিজেরা আরও কাজ করছি। মিটিং করছি নিজেরা মিলে। পরের ৪ ম্যাচে লক্ষ্য হবে যা করেছি তার থেকে আরও উন্নতি কীভাবে করা যায়। আমরা ভালো না করলে জেতাও কঠিন। ইনশাল্লাহ আমরা ভুল থেকে শিখে ভালো কিছু করবো।’ অন্যদিকে বিশ্বকাপে এসে আবারো পুরনো ইনজুরির শিকার তাসকিন। দলের এই সেরা পেসার খেলতে পারেননি ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচ। কাঁধের এ ইনজুরি থেকে বিশ্রাম নিয়ে মুক্তি মিলেছে তার। আজ নেদারল্যান্ডের বিপক্ষে মাঠে নামবেন নিশ্চিত।
সবকিছু পিছনে ফেলে তিনি কতটা প্রস্তত তা নিয়ে তাসকিন বলেন, ‘আসলে কাঁধের চোট প্রথম হয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে।
আমার টেনডনে একটু টিয়ার আছে এটা ম্যানেজ করেই খেলছি। এশিয়া কাপ, বিশ্বকাপে এভাবেই খেলছি। হঠাৎ একটু বেড়ে যাওয়ায় ম্যানেজমেন্ট, ডাক্তার সবাই দেখলেন ফুলে গিয়েছিল। তখন একটু বিশ্রাম নিয়ে এখন আল্লাহর রহমতে বেটার ফিল করছি।’
জাগরণ/খেলা/বিশ্বকাপক্রিকেট২০২৩/এসএসকে